এক আসরের জন্য বিপিএল হয়ে যাচ্ছে বিবিপিএল, অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। আগামী বছর জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী হওয়ায় তাকে উৎসর্গ করা হবে ডিসেম্বর-জানুয়ারির টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্টটি। যে কারণে লাভ-ক্ষতির দিকে তাকাচ্ছে না বিসিবি।
বিপিএলের আগের ছয়টি আসরই হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের নিয়ে। যে কারণে প্রতিবারই আর্থিক দিক থেকে লাভবান হয়েছে বিসিবি। তৃতীয় আসরে লাভের পরিমাণ ছিল ২৫ কোটি টাকা। কিন্তু এবার ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সরিয়ে দিয়ে বিসিবি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সব কিছু পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় আর্থিক ক্ষতির শঙ্কা কিছুটা হলেও থেকে যাচ্ছে।
বিপিএল একমাত্র টুর্নামেন্ট যেখান থেকে আয় করে বিসিবি এবং আয়ের অঙ্ক নেহাতই কম নয়। বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার সবচেয়ে বেশি সুযোগ থাকে টি-টুয়েন্টির এই মেগা আসরে। অথচ এবারের বিপিএলে ক্ষতি যাতে না হয় সেটি নিয়েই ভাবতে হচ্ছে বোর্ডকে।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য ও টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আয়ের দিক থেকে পিছিয়ে পড়বে না। আমরা বলছি না যে লস হবে। লস হবে না, ব্রেক ইভেন পয়েন্টে (আয়-ব্যয় সমান) থাকতে পারে।’
‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল হচ্ছে এটা, আমাদের জাতির পিতার নামে উৎসর্গ করা হচ্ছে। সেজন্য আমরা এটা বলেছি যে, ভেরি স্পেশাল একটা এডিশন। এটাতে ইনকাম জেনারেট করবে কি করবে না- এ ধরণের চিন্তা আমাদের মাথায় আসেনি। আমরা চিন্তা করতেও পারি। হয়ত এখানে লাভ না হলেও ক্ষতি হবে না। এখানে টিম স্পন্সররাও তাদের পার্টনারদের কাছ থেকে ব্যয়ের একটা অংশ নিয়ে আসবে। তাদেরও একটা অবদান থাকবে। তারা যেহেতু খরচ করবে তাতে ক্ষতি নাও হতে পারে।’
বিবিপিএলে সাতটি দলই পরিচালিত হবে বিসিবির ব্যবস্থাপনায়। দলের পৃষ্ঠপোষকতায় থাকবে একটি করে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। একজন করে বিসিবি প্রতিনিধি থাকবেন দল পরিচালনায়। সাতের মধ্যে চার প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ প্রায় চূড়ান্ত। চলতি সপ্তাহে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবেন বিসিবি কর্তারা। আলোচনার পর সেখান থেকে বেছে নেয়া হবে বাকি তিন প্রতিষ্ঠানকে। জালাল ইউনুস জানান, এ মাসের মধ্যেই দল চূড়ান্ত হয়ে যাবে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে প্লেয়ার্স ড্রাফট।
বিপিএলের গত আসরে অংশ নেয়া সাত দলের মালিক অর্থাৎ, ফ্র্যাঞ্চাইজি কোম্পানির কেউই আগ্রহী হননি এবার কোনো দলের শুধুমাত্র স্পন্সর হতে। তবে আগামী বছর তাদের বিপিএলে ফেরার পথ খোলা রাখছে বিসিবি। জালাল ইউনুস বলেন এমনই।
‘তারা (ফ্র্যাঞ্চাইজি) সবাই জানে এবার স্পেশাল একটা এডিশন হচ্ছে। আগামী বছর থেকে আবার তারা ফেরত আসবে। যে কারণে আমরা যখন টিম স্পন্সর চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছি, সেখানে বলা হয়েছে কেবলমাত্র এক বছরের জন্য নতুন যারা আসছেন তারা স্পন্সর পার্টনার হচ্ছেন। আশা করি আগামী বছর থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজি যারা ছিলেন তারা ফিরে আসবেন।’
সপ্তম আসর সামনে রেখে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর দাবি-দাওয়ার সঙ্গে বিসিবি মানিয়ে নিতে না পারায় তৈরি হয় টানাপড়েন। তৈরি হয় ধূম্রজাল। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের ছাড়াই বিপিএল আয়োজনের উদ্যোগ নেয় বিসিবি।
পুরনো কেউ না থাকলেও নতুনভাবে গঠিত দলগুলোর নামের সঙ্গে থাকবে বিভাগের নাম। ড্রাফট থেকে স্কোয়াড তৈরির জন্য প্রতিটি দলের জন্য বরাদ্দ থাকবে ৬ কোটি টাকা। ড্রাফটের তালিকার বাইরে থেকে খেলোয়াড় নিতে চাইলে সেটির জন্য ব্যয় করবে শুধুমাত্র স্পন্সররা।
এ প্রসঙ্গে জালাল ইউনুস বলেন, ‘টিম স্পন্সরদের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্রিকেট বোর্ড টিম করবে। এর জন্য বাড়তি যদি খরচ থাকে এটা বোর্ডও যোগান দেবে। যদি কোনো স্পন্সর পার্টনার চায় তারা কোনো ভালো খেলোয়াড় আনতে, সেটা পারবে। নিজের থেকে খরচ করে যদি কেউ হাই-প্রোফাইল খেলোয়াড় আনতে চায় তাহলে তারা তাদের বাজেট বাড়াতে পারে।’