জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা লক্ষ্যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।
দূতাবাসে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এরপর দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে আলোচনা অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদাররা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তাকে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী করা হয়। বাঙালি যখন স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছে, বঙ্গবন্ধু তখন পাকিস্তানের কারাগারে প্রহসনের বিচারে ফাঁসির আসামি হিসেবে প্রহর গুণছিলেন। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। এসময় বিশ্বনেতারা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে। আন্তর্জাতিক চাপে পরাজিত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শেষ পর্যন্ত বন্দিদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে সসম্মানে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে বিশাল জনসমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বঙ্গবন্ধু, নাতিদীর্ঘ ভাষণে জাতিকে দেন দিক নির্দেশনা। তার স্বপ্নের বাংলাদেশ নির্মাণের রূপরেখা বর্ণনা করেন।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম(বার) বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে ও ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের মতো এগিয়ে নিতে ১০০ বছরের ডেল্টা প্ল্যান গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে যেখানে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান হবে। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে দেশে মাথাপিছু আয় ২০৬৫ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে প্রবাসী বাংলাদেশীদের যার যার অবস্থান থেকে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগের আহবান জানান।
দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান এস এম আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে সেদিন স্বাধীনতার পূর্ণতা পেয়েছিল। দেশে ফিরেই বঙ্গবন্ধু দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। তিনি যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরকে নতুনরূপে গড়ে তুলেছিলেন।
দূতাবাসের কার্যালয় প্রধান ও মিনিস্টার ড. ফরিদ উদ্দিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য প্রদান করেন ডিফেন্স এ্যটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ সিদ্দিকী। আলোচনা শেষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।