ফাইনালের বিতর্কিত রান নিয়ে মুখ খুলল আইসিসি

বিশ্বকাপ ফাইনালের বিতর্কিত ৬ রান নিয়ে কথা হচ্ছে বিশ্বজুড়ে ৷ অথচ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি এই নিয়ে এতদিন মুখে কুলুপ এটেছিল৷

স্টোকসের ব্যাটে বল লেগে বাউন্ডারি হয়ে যায় ৷ সেই সঙ্গে তারা দৌড়ে যে রান নিয়েছেন তার চেয়েও এক রান বেশি দেয়া হয়েছিল ৷ এই এক রান বেশি দেয়া না হলে ফলাফল অন্য হতে পারত ৷ আইসিসির নিয়মকে ভুল ব্যাখ্যা করে এই রান দিয়েছেন ফিল্ড আম্পায়র কুমার ধর্মসেনা ৷

সেই সঙ্গে আদিল রশিদের রানআউট নিয়েও আম্পায়ার ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই কথাও প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে ৷

তবে আইসিসির মুখপাত্র অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমধ্যমকে দেয়া সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, মাঠে আম্পায়াররা যা সিদ্ধান্ত নেন সেই বিষয়ে জনসমক্ষে মন্তব্য আইসিসি করবে না ৷

ফক্সস্পোর্টস অস্ট্রেলিয়াকে ওই মুখপাত্র বলেন, ‘আম্পায়াররা নিয়মের ব্যাখ্যা মাথায় রেখেই মাঠে সিদ্ধান্ত নেয় এবং আমরা এসব সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করব না।’

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৫ রান। ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম দু’বলে কোনো রান নিতে পারেননি বেন স্টোকস। তৃতীয় বলে ছক্কা মারেন। চতুর্থ বলে ভাগ্যের জোরে ৬ রান পেয়ে যায় ইংলিশরা। দু’রান নেয়ার সময় রানআউট থেকে বাঁচতে ডাইভ দেন স্টোকস। গাপটিলের ছোঁড়া বল স্টোকসের ব্যাটে লেগে বাউন্ডারির বাইরে চলে যায়।

প্রশ্ন উঠেছে, ওভার-থ্রো’র সৌজন্যে ইংল্যান্ড ৬ রান না পায় ম্যাচ টাই হতো কী না সন্দেহ। টেলিভিশন রিপ্লে’তে স্পষ্ট দেখা যায় যে, ডিপ মিডউইকেট থেকে গাপটিল বল ছোঁড়ার সময় স্টোকস ও তার নন-স্ট্রাইক পার্টনার আদিল রশিদ দ্বিতীয় রানের জন্য পরস্পরকে ক্রস করেননি।

আইসিসি’র নিয়ম (১৯.৮) অনুযায়ী ওভার থ্রো’র বাউন্ডারির ক্ষেত্রে ফিল্ডার বল ছাড়ার মুহূর্তে ব্যাটসম্যানরা পরস্পরকে ক্রস করলে তবেই তাদের ফিল্ড রান যোগ হবে ওভার-থ্রো’র বাউন্ডারির সঙ্গে।

তাই যদি হয়, তবে ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে ওভার-থ্রো’র বাউন্ডারির সঙ্গে বাড়তি এক রান যোগ হওয়া উচিত। অথচ ফিল্ড আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা ৬ রানের (২টি ফিল্ড রান ও ওভার-থ্রো’র চার) সংকেত দেন। এক রান কম হলে শেষ ২ বলে জয়ের জন্য তিনের বদলে ৪ রান দরকার হতো স্বাগতিকদের। ম্যাচের ছবিটা তখন বদলে যেতেও পারত।

ইংল্যান্ডকে এই ছয় রান দেয়া ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন আইসিসির পাঁচবারের সেরা সাবেক আম্পায়ার ও ক্রিকেট আইন প্রণয়নকারী সংস্থা এমসিসির উপ-কমিটির অন্যতম সদস্য সাইমন টোফেলও।

ফক্সস্পোর্টস-অস্ট্রেলিয়াকে তিনি ম্যাচের পরেরদিন বলেছিলেন, ‘এটা আম্পায়ারদের জাজমেন্টের ভুল। ইংল্যান্ড ৬ রান নয়, ৫ রান পায়।’

এমসিসির আইন বইয়ের ১৯:৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো ব্যাটসম্যান দৌড়ে রান পূর্ণ করার আগেই ওভার থ্রো’তে বাউন্ডারি হলে শুধু ওভার থ্রো’র রান গণনা করা হবে। অর্থাৎ, দৌড়ে নিতে যাওয়া রানটা বাতিল হয়ে যাবে, আর ব্যাটসম্যানও বদল হবে। সে হিসাবে দৌড়ে নেয়া ২ রানের জায়গায় ইংল্যান্ড পেত ১ রান। সঙ্গে স্ট্রাইকিং প্রাপ্তে স্টোকসের জায়গায় থাকতেন আদিল রশিদ। আর শেষ ২ বলে তখন জয়ের জন্য ৪ রান প্রয়োজন হতো ইংল্যান্ডের।

তবে টোফেল মনে করেন না ওই ৬ রান ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘ওরকম ভুল হওয়া স্বাভাবিক। একজন আম্পায়ারকে অনেক দিক খেয়াল রাখতে হয়। থ্রো বল স্টোকসের ব্যাটে লাগার সময় তিনি কোথায় ছিলেন সেটাও। এটা বেশ কঠিন।

বিশ্বকাপ-২০১৯লিড স্পোর্টস