ফরিদপুরের ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে ‘চিকিৎসা অবহেলায়’ প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো.খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম কে রহমান ও ব্যারিস্টার এম মইনুল ইসলাম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি আ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
আদেশের বিষয়ে রিটের পক্ষের আইনজীবী এম মইনুল ইসলাম বলেন: অন্তত ৩ জন গাইনকোলজি ও অবস বিশেষঞ্জের সমন্বয়ে একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি করে তাদের করা তদন্ত প্রতিবেদন তিন সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে দাখিল করতে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। রুলে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় অবহেলার কারণে কেন তিন বিবাদীকে দায়ী করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদলত। এই বিবাদীরা হচ্ছেন, স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের সেক্রেটারী জেনারেল সালাউদ্দিন আহমেদ, ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক এবং ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের অতিথি চিকিৎসক ডা.দিলরুবা জেবা এবং ওই হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
এর আগে হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.ইশতিয়াক আহমেদ। সে রিট আবেদনে দৈনিক সমকাল পত্রিকায় ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত “ফরিদপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ” শীর্ষক প্রতিবেদনটি যুক্ত করা হয়।
পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়: ফরিদপুরের ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে চিকিৎসক ও সংশ্নিষ্টদের অবহেলায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। ৩০ আগস্ট শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ফরিদপুর হালিমা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক প্রসূতি খায়রুন্নাহার তানির সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে কন্যাশিশুর জন্ম দেন। এরপর ৩১ আগস্ট শনিবার সকাল ৭টায় হাসপাতালে মারা যান তানি। তানির স্বামী হাইকোর্টের আইনজীবী সফওয়ান করিম অভিযোগ করেন, ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ডাক্তার দিলরুবা জেবা নির্ধারিত সময়ের আগেই রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশন করায় এই মৃত্যু হয়েছে। তার অভিযোগ, অসুস্থ হওয়ার পরও শিশু হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের ডেকে পাওয়া যায়নি।
ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দীন ফরিদ বলেন: ডা. জেবা এই শিশু হাসপাতালে অতিথি চিকিৎসক হিসেবে প্রসূতিদের অপারেশন করে থাকেন। আমাদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই প্রসূতির চিকিৎসা সেবায় গাফিলতি করেনি।
আর ডা. দিলরুবা জেবা বলেন: রোগী যথেষ্ট জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পূর্ব নির্ধারিত সময়েই অপারেশন করে তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছি আমরা। তার প্রেসার বেশি ছিল এবং তিনি প্রি-একলামশিয়ায় ভুগছিলেন। হার্ট ফেইলিওর বা ব্রেন হেমারেজে তার মৃত্যু হয়েছে।