পেসারদের জন্য স্বর্গ সাজিয়ে অপেক্ষায় ইন্দোর

একটা সময় ভারতের উইকেট মানেই ছিল স্পিনারদের স্বর্গভূমি। কুম্বলে-হরভজন থেকে শুরুর করে অশ্বিন-জাদেজাদের জয়জয়কার ছিল আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ে। সময় পাল্টেছে। এখন দলের বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দেন বুমরাহ-সামিদের মতো পেসাররা। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাবু করতে এই পেসারদের জন্যই ইন্দোরের উইকেট সাজছে সবুজ ঘাসে!

রবি শাস্ত্রী কোচ হয়ে আসার পর থেকে ভারতীয় দলে পেসারদের প্রাধান্য। উইকেটও সাজানো হয় পেসারদের কথা মাথায় রেখেই। ২০১৭ সালে সাউথ আফ্রিকা সফরের কথা মাথায় রেখে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠগুলোকে সবুজ ঘাসে সাজিয়েছিল ভারত।

ইন্দোরের হলকার স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ১৪ নভেম্বর সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। টাইগারদের পেস দুর্বলতার কথা মাথায় রেখে এ মাঠের উইকেটে রাখা হচ্ছে সবুজ ঘাস। শুধু প্রতিপক্ষকে কাঁপাতেই নয়, বাউন্সি উইকেটে নিজেদের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে এখন ঘরোয়া ক্রিকেটেও এমন ধরনের উইকেট ব্যবহার করে ভারত।

রঞ্জি ট্রফির সবশেষ টানা দুই ফাইনাল হয়েছিল হলকার স্টেডিয়ামে। উইকেটে ছিল ঘাস। এবার বাংলাদেশ সিরিজে পেসাররা বাউন্স আর স্ট্রোক খেলতে পারলে ব্যাটসম্যানরাও সুবিধা পাবেন বলে জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কিউরেটর সমান্দার সিং চৌহান। চার বছর ধরে এ মাঠে লাল মাটি ব্যবহার করছেন তিনি।

‘লাল মাটির উইকেটে বাউন্স হয় বেশি। পেসারদের জন্য ভালো, খেলতে পারলে ব্যাটসম্যানদের জন্যও। স্ট্রোক খেলা ব্যাটসম্যানরা ভালো শট পায়। মাঝে মাঝে উইকেটে টার্নও থাকে। সবার জন্যই আসলে এটা স্পোর্টিং উইকেট, সবাই কম-বেশি সুবিধা পায়।’

বিদর্ভ বনাম দিল্লির মধ্যকার সবশেষ রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে ব্যাটসম্যানরা পেয়েছিলেন দুই সেঞ্চুরি ও সাত হাফ-সেঞ্চুরি। পেসাররাও বেশ সুবিধা পেয়েছেন, ক্ষেত্র বিশেষে স্পিনাররাও। ফাইনালের উইকেট বেশ প্রশংসাই পেয়েছে সবার। ঘরোয়া ক্রিকেটে আরও বেশি বেশি এমন উইকেটের দাবি জানিয়েছেন দেশটির সাবেকরা।

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্টের জন্য বোর্ড থেকে আলাদা কোনো চাহিদা পত্র আসেনি বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। ভারতের পেসারদের আগুনে ফর্ম আর বাংলাদেশের মাত্রাতিরিক্ত স্পিন নির্ভরশীলতার কথা মাথায় রেখেই নিজ উদ্যোগে ‘শক্ত উইকেট’ তৈরি করেছেন কিউরেটর।

২০১৫ সালের পর থেকে আস্তে আস্তে সবরকম উইকেটে খেলার চর্চা শুরু করেছে ভারত। সময়টাতে ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষের ২৬ উইকেট নিয়েছে পেসাররা, স্পিনারদের দখলে ৩৪ উইকেট। বিদেশের মাটিতে ব্যাটসম্যান বা পেসারদের যেন ভুগতে না হয় সেজন্যই এ উদ্যোগ। ভারত যখন দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে এমন প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে, বাংলাদেশ একপেশে ভাবে স্পিনারদের উপরই নির্ভর করে চলেছে। ইন্দোরে তাই ঘাসের উইকেটে শক্ত চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে!

বাংলাদেশ -ভারত সিরিজবাংলাদেশ দলের ভারত সফরলিড স্পোর্টস