পুঁজিবাজারে চরম দুরবস্থার দায় কার?

গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় চরম দুরবস্থা বিরাজ করছে দেশের পুঁজিবাজারে। পতনের ধারা থেকে পুঁজিবাজারকে তুলতে সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সংসদ সদস্যরা।

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখলে দেখা যায়, ২০১০ সাল থেকেই বাজার সংকট অবস্থা চলছে। আইপিও ও প্লেসমেন্ট শেয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে কারসাজি করে বাজার থেকে অর্থ সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে নানা টুকরো ঘটনায় পুঁজিবাজারের পেছনের চিত্র প্রকাশিত হয়েছে গত একদশকে।

বর্তমান সময়ে বাজারের এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা এতোটাই হতাশ যে, তারা কোনো ধরণের প্রতিবাদ বা বিক্ষোভের মানসিক শক্তিও হারিয়েছে বলে অনেক ক্ষুদ্র বিনোয়োগকারীর মতামত। বাজারের এই অবস্থায় ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), বিএসইসি এবং ডিএসই বিভিন্ন সংস্থাগুলোর কোনো কার্যকর উদ্যোগও চোখে পড়েনি। বিষয়গুলো খুবই চিন্তার।

এই অবস্থায় দেশের ৪ সরকারি ব্যাংক পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংকগুলো হলো- সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক। বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারি ৪ বাণিজ্যিক ব্যাংকের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ত্রৈমাসিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

এ সিদ্ধান্তের পরপরই কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজার। বৃহস্পতিবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক ৮১ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ১৪৯ পয়েন্টে। আর অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২০৭ পয়েন্ট।

ব্যাংকিং খাতের নাজুক অবস্থার পাশাপাশি পুঁজিবাজারের বেহাল অবস্থা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছে কয়েকবছর ধরে। এই অবস্থার পরিবর্তন জরুরি, সেইসঙ্গে এই অবস্থার জন্য কারা দায়ী? তাও খুঁজে দেখে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলে আমরা মনে করি।

অতীতের বিভিন্ন তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে কোনো ‘খেলোয়াড়’ থাকলে তা শক্ত হাতে দমন করা এখন সময়ের দাবি।

পুঁজিবাজারশেয়ার বাজারশেয়ারবাজারসম্পাদকীয়