পিরোজপুর জেলা সদরের গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠেছে মাল্টার বাগান। সাধারণ কৃষক ও উদ্যোক্তারা গৃহস্থ ভিটায় মাল্টা বাগান করে অল্পদিনেই লাভ করছেন কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।
কৃষি বিভাগের আশা, দক্ষিণের ওই এলাকাগুলোতে সবচেয়ে লাভজনক কৃষি উদ্যোগ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে মাল্টা বাগান।
ডাকাতিয়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক রেবতি সিকদার। কৃষির আয়ে সংসার চলে না। তাই বছরের বেশিরভাগ সময় করতে হয় অন্যান্য কাজ।
তিনিই বসতভিটার ১০ কাঠা জমিতে বছর তিনেক আগে লাগান ১৫০টি মাল্টা গাছ। যে গাছগুলো এবার ফলে পূর্ণ, সে সঙ্গে রেবতির জীবন ভরে গেছে উন্নতি ও সমৃদ্ধির স্বপ্নে।
রেবতি সিকদার বলেন, প্রায় ৫০০ মাল্টা ধরেছে বাগানের তিন বছরের গাছগুলোতে। আমার বাগানে দুই জাতের মাল্টা রয়েছে। বারিজাত ১ ও ইন্ডিয়ান মালটা। আমি প্রায় ৭০ হাজার টাকার বিক্রি করেছি। এই পিরোজপুর, বাগেরহাট এবং ঢাকাতেও পাঠিয়েছি এই বাগানের ফল।
মাল্টা নামের ফলটি টক না মিষ্টি? এ প্রশ্নের জবাবে সাধারণ মানুষের ভোট যখন পড়ে টকের দিকেই, রেবতি সিকদারের বাগানের মাল্টা যেন পাল্টে দেয় এ সংজ্ঞা।
এলাকাবাসী জানায়, মোটেও টক নয় রেবতি সিকদারের বাগানের মালটা অনেক মিষ্টি।
সুমিষ্ট মাল্টার এই জাতটি বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট উদ্ভাবিত জাতটি বারি-১ জাতের। যেটি সম্প্রসারণে ভূমিকা রয়েছে কৃষি বিভাগের।
পিরোজপুর কৃষি সদরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, প্রকল্প সহযোগিতা ও উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে এবছর ৪০-৫০টি নতুন বাগান তৈরি হয়ে গেছে। আমরা মূলত তাদের চারা সরবরাহ করি ও সার সরবরাহ করি।
ডাকাতিয়া ও আশেপাশের ১০/১২ টি গ্রামে এখন গড়ে উঠেছে ৬২টি মাল্টা বাগান। যার সামান্য জমি আছে সেই এখন স্বপ্ন দেখছে মাল্টা বাগান করে ভাগ্য পাল্টে দেয়ার।
দেশেই মাল্টা উৎপাদনে এক নতুন সম্ভাবনার কথা জানান দিচ্ছে রেবতি সিকদারের এই মাল্টা বাগান। এই কৃষকসহ অন্যান্য কৃষক যাদের মধ্যে মাল্টা সরবরাহ হয়েছে এরই মধ্যে এবং কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ মনে করছে এই এলাকা একসময় মাল্টা উৎপাদনের জন্য অঞ্চল হিসেবে ঘোষিত হবে। এবং মাল্টা চাষে এই এলাকা এগিয়ে যাবে অনেক দূর।