তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন: নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করাও এক ধরনের নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন।
তিনি বলেন: যে কোন নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ উপস্থাপন করা এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা নিয়ে ছোট খাটো যে ঘটনাগুলো হচ্ছে, সেগুলো বিদেশিদের কাছে উপস্থাপন করাও তো এক প্রকার নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন: ইভিএম নিয়ে বিএনপি হাইকোর্টে গিয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে তারা হাইকোর্টে গিয়েছিল ইভিএম এর বিরুদ্ধে। হাইকোর্ট তাদের পক্ষে রায় দেয়নি। সর্বোচ্চ আদালতে তাদের অবেদন রিজেক্ট করে দিয়েছে।
তিনি বলেন: যেখানে হাইকোর্ট তাদের পক্ষে রায় দেয়নি, আবার সেই একই নালিশ বিদেশিদের কাছে গিয়ে উপস্থাপন করা তো আদালত অবমাননার শামিল এবং যে কোন নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের কাছে অভিযোগ করা আচরণ বিধি লংঘন।
হাছান মাহমুদ বলেন: বিএনপির কোন অভিযোগ থাকলে তা ভোটার ও জনগণের কাছে উপস্থাপন করবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে বিদেশী রাষ্ট্রদূতের কাছে উপস্থাপন করা অনেকেই মনে করেন এটিও এক প্রকার আদালত আবমাননার শামিল।
বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন: ইভিএম হচ্ছে একটি অধুনিক প্রযুক্তি। পুরো ভারতবর্ষের সাধারণ নির্বাচনে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হয়েছে এবং ভারতে এই ভোট গ্রহণ বিষয়ে তেমন কোন অভিযোগ ওঠেনি। যুক্তরাষ্ট্রেও ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন: এই আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে কেন ভোট গ্রহণের বিরোধিতা করছে বিএনপি তা আমার বোধগম্য নয়। তবে বিএনপি সবসময় অধুনিক প্রযুক্তির বিরোধিতা করে। কারণ তারা প্রযুক্তিকে ভয় পায়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন: বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবল বাংলাদেশকে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তখনকার সরকার প্রধান খালেদা জিয়া সাবমেরিন ক্যাবল সুবিধা গ্রহণ করেননি। কারণ তিনি ভেবে ছিলেন যে দেশের অভ্যন্তরীণ গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে। কিন্তু পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগের সরকারের সময় কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে সংযুক্ত হতে হয়েছে।
তিনি বলেন: ইভিএম এর ক্ষেত্রেও বিএনপির মানসিকতা একই রকম। দেশে এক সময়ে হাত তুলে ভোট হত। পরবর্তীকালে ব্যালোটের মাধ্যমে ভোট নেয়া শুরু হয়। ইভিএম ইতিপূর্বে বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়েছে। স্থানীয় নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হয়েছে। এতে দেখা গেছে কেন্দ্র দখল, ব্যালটে সিল মারার তেমন কোন অভিযোগ আসেনি। কিন্তু তারপরও তারা ইভিএম নিয়ে অভিযোগ করছে।
হাছান মাহমুদ বলেন: নির্বাচনে তারা পরাজিত হবে তা বুঝতে পেরে আগে থেকেই নির্বাচনকে বিতর্কিত করার পথ তৈরি করার চেষ্টা করছে। নির্বাচন কমিশনার পদটি একটি সাংবিধানিক পদ। যেমন হাইকোর্টের বিচারপতি, সেগুলোও সাংবিধানিক পদ। হাইকোর্টের কোন বিচারপতি যেমন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় জনগণের সামনে উপস্থাপন করেন না এবং সেটি নিয়মও নয়। সাংবিধানিক পদে থেকে সেটি করা সমীচিন নয়। এটি একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই সাংবিধানিক পদে থেকে নিজেদের কর্মপরিবেশ নিয়ে নিজেদের ফোরামে কথা বলাই ভাল।