ধর্ষকদের জনতার হাতে ছেড়ে দিন: জয়া বচ্চন

ভারতের সমাজবাদী পার্টির এমপি এবং জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া বচ্চন ধর্ষকদের বিচার ও শাস্তির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সংসদে আগুন ঝরিয়েছেন। বলেছেন, ধর্ষকদের জনতার হাতে ছেড়ে দেয়া উচিত এবং প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারা উচিত।

দেশটির তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে সম্প্রতি এক তরুণ পশুচিকিৎসককে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ঘটনার প্রসঙ্গেই সোমবার সংসদে এ কথা বলেন তিনি।

এনডিটিভি জানায়, গত বুধবার চারজন ব্যক্তি মিলে পরিকল্পিতভাবে ২৬ বছর বয়সী ওই তরুণীকে প্রথম ধর্ষণ ও পরে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। পুলিশের দেয়া তথ্য অনুসারে, অভিযুক্তরা ওই পশুচিকিৎসককে টোল বুথের কাছে স্কুটার পার্ক করতে দেখে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্তারিত পরিকল্পনা করে কীভাবে ধর্ষণ করার পর আগে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হবে এবং তারপর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হবে।

এ বিষয়ে রাজ্যসভায় কথা বলতে গিয়ে ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন জয়া। আবেগতাড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি জানি এ পর্যন্ত কতবার এ ধরনের অপরাধের পর আমি উঠে দাঁড়িয়েছি এবং এ নিয়ে কথা বলেছি। আমি মনে করি এবার সময় এসেছে… প্রসঙ্গ নির্ভয়া বা কথুয়ার হোক বা হায়দরাবাদে যা হয়েছে সেটি হোক… আমার মনে হয় জনগণ এখন সরকারের কাছ থেকে একটি উপযুক্ত এবং স্পষ্ট জবাব চায়।’

‘সরকার কী করেছে? বিষয়টিকে কীভাবে সামলাচ্ছে? নির্যাতনের শিকারদের প্রতি কীভাবে ন্যায় করা হয়েছে? আমি নাম নেবো না, কারণ আমরা সবাই নাম জানি… কিন্তু সেখানকার নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানকে কি এজন্য দায়ী করা উচিত নয়? তাদের কাছে কি জবাব চাওয়া উচিত নয়? আমি যতটা জানি, তেলেঙ্গানার ওই এলাকায় ওই ঘটনার মাত্র একদিন আগেও একই ধরনের আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল… তাহলে এসব বন্ধ হলো না কেন?’

জয়া বচ্চন দাবি করেন, যে ব্যক্তিরা নারী ও শিশুদের এমন ভয়াবহ নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের নাম প্রকাশ করা উচিত এবং তাদেরকে প্রকাশ্যে লজ্জিত করা উচিত।

তখনই তিনি ধর্ষকদের শাস্তির বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

‘কিছু কিছু দেশে নিয়ম আছে, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তার বিচার জনতার হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। জনগণ ন্যায়বিচার করে। যদিও একটু কঠোর শোনায়, তবুও আমার পরামর্শ হবে, এই ধরনের অপরাধীদের (ধর্ষক) প্রকাশ্যে নিয়ে আসা উচিত এবং পিটিয়ে মারার জন্য জনগণের হাতে ছেড়ে দেয়া উচিত,’ বলেন জয়া।

জয়ার বক্তব্যের পর এআইএডিএমকে’র এমপি ভিজিলা সত্যনাথও কঠোর বক্তব্য দেন ধর্ষণের বিচার ও শাস্তি নিয়ে। তিনি বলেন, ভারত নারী ও শিশুদের জন্য আর নিরাপদ নেই। বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

অন্যদিকে কংগ্রেস এমপি আমি ইয়াজনিক বলেন, জরুরি ভিত্তিতে এখন সমাজ সংস্কার প্রয়োজন। এ উদ্দেশ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলোর মিলিত প্রচেষ্টা দাবি করেন তিনি।

এছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য এ নিয়ে রাজ্যসভায় আওয়াজ তোলেন।

জয়া বচ্চনতেলেঙ্গানাধর্ষণ