দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির দুদকের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের মামলায় হাইকোর্টে এনামুল বাছিরের করা জামিন আবেদনের শুনানিতে দুদক আইনজীবী বাছিরের জামিনের বিরোধিতা করে এসব কথা বলেন।
এ সময় বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চকে খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘ডিআইজি মিজানুর রহমান পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। আর এনামুল বাছির দুদকের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। দুদকের জন্য এরচেয়ে লজ্জার বিষয় আর নেই।’
মঙ্গলবার আদালতে এনামুল বাছিরের জামিনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এই আইনজীবী আদালতকে বলেন: ডিআইজি মিজানের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করেই এই মামলার এফআইআর হয়েছে। আর মিজানুর রহমান তার বক্তব্যে কখোনো নিজেকে রক্ষা করতে চাননি, সে শুধু মামলার সহ আসামি বাছিরকে জড়াতে চেয়েছেন। যেটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি আদালতকে আরো বলেন: এনামুল বাছিরের আগে দুই বার স্ট্রোক করেছেন। এবং তিনি ডায়াবেটিসের রোগী। তাই তাকে জামিন দেওয়া হোক।
কিন্তু আদালত বাছিরের জামিন কিংবা জামিন প্রশ্নে রুল জারি করতে না চাইলে বাছিরের জামিন আবেদনটি (টেক ব্যাক) ফেরত নেন তার আইনজীবী।
মঙ্গলবার আদালতে বাছিরের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
গত ২৩ জুলাই খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠান ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ। এরপর জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি।
এর আগের দিন ২২ জুলাই রাতে ঢাকার দারুস সালাম এলাকা থেকে বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি তদন্ত দল।
পুলিশের ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদের খোঁজে দুদক যে অনুসন্ধান করছিল, তার দায়িত্ব পেয়েছিলেন এনামুল বাছির।
সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান গত ৮ জুন দাবি করেন, বাছির তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন।
ডিআইজি মিজানের আরো দাবি, নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বাছির যে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, তা প্রমাণ করতে এই কাজ তিনি করেছেন।
অবশ্য ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বাছির বলেন, ‘সব বানোয়াট’।
আলোচিত এই ঘুষের অভিযোগ ওঠার পর তাদের দুজনকেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা গত ১৬ জুলাই তাদের দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এই মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা মিজানকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছিল দুদক। যিনি অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আগে থেকেই কারাগারে রয়েছেন।