নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শ্যালিকা ও তার দুই মেয়েসহ একই পরিবারের তিনজনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আটক আব্বাস উদ্দিন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে জেলা পুলিশ লাইনে প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
গণমাধ্যমকে পুলিশ সুপার এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আরো জানান: আটক আব্বাস উদ্দিন একজন ইয়াবা সেবনকারী এবং সে তার শ্যালক ও স্ত্রীর প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের উপর প্রতিশোধ নিতে দুই মেয়েসহ শ্যালিকাকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে।
আব্বাস উদ্দিনের স্বীকারোক্তি মতে, তার শ্যালক তাকে চড় মেরেছিল এবং তার স্ত্রী ও শ্যালক প্রায় সময়ই শ্যালিকা নাসরিনের বাসায় এসে সময় কাটাতো। সেই ক্ষোভ থেকেই আব্বাস উদ্দিন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান: আটক আব্বাস উদ্দিনকে রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে এবং তার জবানবন্দি রেকর্ড করার পদক্ষেপ নেয়া হবে।
পুলিশ সুপার বলেন: হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে তিনি আসামীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে জেলা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সব সংস্থাকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে খুনীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন, তিন ঘণ্টার ব্যবধানে আসামীকে গ্রেপ্তার করে এর বাস্তবায়ন করেছেন।
এর আগে তিন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আব্বাস উদ্দিন এলাকাতেই আত্মগোপনে ছিল। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার হাউসের পাশে একটি কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকে খাবার টেবিলের নীচে সে লুকিয়ে থাকে। সেখান থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তাকে আটক করলে সে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে নিজের দোষ স্বীকার করে।
বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সি আর খোলা এলাকায় একটি ছয় তলা বাড়ির ষষ্ঠতলার ফ্ল্যাট বাসা থেকে পুলিশ আব্বাস উদ্দিনের শ্যালিকা নাসরিন, তার দুই শিশু কন্যা নুসরাত ও খাদিজার লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্নসহ গলা কাটা অবস্থায় পায়। পরে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহগুলো সদরের জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
হত্যাকাণ্ডের পর পর পুলিশ আব্বাস উদ্দিনকে সন্দেহ করে এবং তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল।