দাম কমেছে ফেসবুক শেয়ারের

গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা এবং কন্টেন্ট পরিবর্তনের পরও জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ।

ফেসবুক ২০১৯ সালে আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১৬% কম লাভ করেছে। যার পরিমাণ প্রায় ১৮.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

আর লাভ কমে যাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ৬ শতাংশের বেশি হ্রাস পায়। তবে ২০১৮ সালে ফেসবুকের বিনিয়োগকারীরা লাভ বাড়ানোর জন্য ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা এবং কন্টেন্ট পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সতর্ক করেন।

২০১৬ সালে নির্বাচনে প্রচারণায় ভুল নিউজ ছাড়ার এবং ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কাণ্ডে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মকে। গত জুলাই মাসে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের দায়ে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানা দিতে হয় ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে।

এর পরেই ফেইক নিউজ বা রাজনৈতিক প্রচারণার ক্ষেত্রে সতর্ক হয় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি আর রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নিয়ে সমালোচনা সত্ত্বেও ২০১৯ সালে আয় বেড়েছে ফেসবুকের। বেড়েছে ব্যবহারকারীর সংখ্যাও।

ফেসবুক বলছে, গত ডিসেম্বরে বিশ্বব্যাপী ২৬০ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেছেন, যা এর পরের মাসেই পরের মাসেইতা ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ব্যবহারকারীর সঙ্গে আয়ও বেড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির। ২০১৯ সালের শেষ তিন মাসে তাদের আয় ছিল প্রায় ২ হাজার ১শ কোটি মার্কিন ডলার, যা এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি।

বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ই-মার্কেটারের প্রধান বিশ্লেষক ডেব্রা আহো উইলিয়ামসন বলেন, গত দুই বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিকে (ফেসবুক) ঘিরে চলা সব উদ্বেগ সত্ত্বেও এর আয় প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে এবং এটি ব্যবহারকারী বৃদ্ধির হারও ধরে রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটি দেখিয়েছে, সমালোচনার মধ্যেও সে নিজের কাজ চালিয়ে যেতে পারে এবং সেখান থেকে আয় আর ব্যবহারকারী উভয় ক্ষেত্রেই লাভ করতে পারে।

ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপসহ ফেসবুকের প্রতিমাসে ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ২৮৯ কোটি, যা আগের বছরের তুলনায় অন্তত নয় শতাংশ বেশি। তবে নিজেদের মালিকানাধীন এ দুই প্রতিষ্ঠান থেকে কতটা আয় হচ্ছে, তার বিস্তারিত জানায়নি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

আয় বাড়ছে, ব্যবহারকারী বাড়ছে, লাভ হচ্ছে, এমনকি সর্বকালের সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হচ্ছিল ফেসবুকের শেয়ার। তারপরও হুট করেই প্রায় সাত শতাংশ নেমে গেছে তাদের শেয়ারের দাম। এছাড়া, আয় বৃদ্ধির হারও কমেছে ফেসবুকের। দুই বছর আগেও তাদের আয় বৃদ্ধির হার ছিল ৪৭ শতাংশ। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ শতাংশে। ফলে চাপ বাড়ছে মার্ক জুকারবার্গের প্রতিষ্ঠানটির ওপর। বিনিয়োগকারীরা তার প্রতিষ্ঠান থেকেই বেশি লাভ করতে পারবেন, এ বিশ্বাস ধরে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফেসবুকের বিরুদ্ধে বিশ্বাসহীনতা এবং তারা ব্যবহারকারীদের তথ্য নিয়ে কী করছে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে অনেকের। গত বছর ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য হাতছাড়া করার দায়ে ফেডারেল ট্রেড কমিশন ফেসবুককে ৫০০ কোটি ডলার জরিমানা করেছিল। এফটিসির ইতিহাসে এটাই এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় জরিমানার ঘটনা।

ফেসবুক