দলের নেতাকর্মীদের সুবিধা দিতেই সরকার চাল আমদানি করছে: মির্জা ফখরুল

দলের মধ‍্যস্বত্বভোগী নেতাকর্মীদের সুবিধা দিতেই সরকার চাল আমদানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, কৃষকদের যে দুরবস্থা তা সরকারের ভুল নীতির প্রতিফলন। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী দেশ খাদ্যে বিশেষ করে চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চাল উৎপাদনের পরিমাণ তিন কোটি ৬২ লাখ টন। অথচ এই সময়ে সরকারি ও বেসরকারিভাবে চাল আমদানির পরিমাণ ৬৯ লক্ষ মেট্রিক টন গত ১০ মাসে তিন লাখ ৩ হাজার হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। আমদানির অপেক্ষায় রয়েছে ৯৭ হাজার টন চাল।

শনিবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন: সরকার একদিকে বলছে চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি করছে। সরকারের মিথ্যাচার ধরা পড়েছে।

সিপিডির এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে সিপিডি বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিতে অবৈধ অর্থ পাচার শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয় ২০১৩ -১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে যত চাল বিদেশ থেকে আনা হয়েছে তার আমদানি মূল্য ছিল টন প্রতি ৮০০ থেকে এক হাজার ডলার। অথচ ওই সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্য ছিল টন প্রতি ৫০০ টাকা। এই বাড়তি টাকা দেশ থেকে পাচার হয়েছে বলে ঐ প্রতিবেদনে ইঙ্গিত করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, চাল আমদানির ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাত্রা এতই ব্যাপকতা লাভ করেছে যে, সরকারের অংশীদারী একটি দলের প্রধান সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননও চাল আমদানিতে সরকারের দুর্নীতির কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়াও সরকারি দলের সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেনও এহেন পরিস্থিতির জন্য এ সরকারের সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে দায়ী করেছেন।

তিনি বলেন, সরকারী ধান-চাল সংগ্রহের মূল দু’টি উদ্দেশ্যর একটি হলো কৃষককে মূল্য সহায়তা (প্রাইজ সাপোর্ট) দেয়া, আরেকটি হলো সরকারি মজুদ ব্যবস্থপনা (পাবলিক স্টক ম্যানেজমেন্ট)। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে হলে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান চাল সংগ্রহ করতে হবে। এতে কিছুটা হলেও কৃষক লাভবান হবে। কিন্তু সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে না কিনে কিনছে চালকল মালিকদের কাছ থেকে। অর্থাৎ মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের কাছ থেকে। এতে লাভবান হচ্ছে চালকল মালিকরা। আর সর্বশান্ত হয়ে মনের দুঃখে কৃষক তার ধান ক্ষেতেই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলছে।

সরকার ধান-চাল সংগ্রহের মাধ্যমে দলীয় ব্যবসায়ী চালকল মালিকদের মুনাফা পাইয়ে দিচ্ছে। বাজার থেকে কম মুল্যে ধান কিনে চাল কল মালিকরা চাল তৈরী করে সরকারের কাছে বিক্রি করে প্রতি কেজিতে মুনাফা করছে ১০ টাকা। আর কৃষক তার জমিতে উৎপাদিত ধান বাজারে বিক্রি করে কেজি প্রতি লোকসান গুনছে ১০/১২ টাকা- জানান তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম প্রমুখ।

চাল আমদানিবিএনপি