১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনা-যশোর ও রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাটকলগুলোতে আজও বিক্ষোভ ও প্রতীকি অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিকরা। তৃতীয় দিনের মত চলছে তাদের এ কর্মসূচি। টানা এ কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে।
খুলনা
খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে আজও বিক্ষোভ ও প্রতীকি অনশন কর্মসূচি পালন করেছে শ্রমিকরা। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রম পরিষদের ডাকে দ্বিতীয় পর্যায়ে মঙ্গলবার কর্মসূচির তৃতীয় দিনে অব্যাহত রয়েছে।
খালিশপুর, আটরা ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে বিক্ষোভ ও অনশন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিক-কর্মচারি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া ৮ জন শ্রমিক গত রাত থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত অসুস্থ হয়েছে।
এদের মধ্যে প্লাটিনাম জুট মিলের তাত বিভাগের মোঃ আবু ও ফিনিসিং বিভাগের মোঃ শাহ আলমকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অনশনস্থলে অর্ধশতাধিক শ্রমিককে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।
খালিশপুরে ক্রিসেন্ট, প্লাাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর ও দিঘলিয়ার ষ্টার মিলের শ্রমিকরা বিআইডিসি রোডে, আটরা শিল্প এলাকার আলীম, ইস্টার্ন এবং নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার কার্টেং, জেজেআই মিলের শ্রমিকরা স্ব স্ব মিল গেটে অবস্থান নিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন কর্মসূচি পালন করছে। তীব্র শীতের মধ্যে ২ রাত ৩ দিন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করে একে পর এক অনাহারি শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
খালিশপুর বিআইডিসি রোড, খুলনা-যশোর মাহাসড়কে প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তায় শ্রমিকরা এ অনশন কর্মসূচি পালন করছে। যে কারণে রাস্তার দু’পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। কর্মসূচি চলাকালে খালিশপুর, আটরা ও রাজঘাট এলাকায় দফায় দফায় শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শ্রমিক সমাবেশে বক্তৃতা করেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মুরাদ হোসেন, মোঃ সোহরাব হোসেন, শাহানা শারমিন, হুমায়ুন কবির খান, আবু দাউদ দ্বীন মোহাম্মদ ও শেখ মোঃ ইব্রাহীম। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে শ্রমিকদের ১১ দফা বাস্তবায়নের জন্য বিজেএমসি কর্তৃপক্ষের কাছে জোর আহবান জানান।
রাজশাহী
বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধ ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন রাজশাহী পাটকল শ্রমিকরা।
পাটকল শ্রমিক সভাপতি জিল্লুর রহমান বলেন: সরকারের কাছে যে দাবি দিয়েছিলেন সে দাবিগুলো না মানার কারণে স্থগিত আন্দোলন পুনরায় চালু করেছেন তারা।
তাদের দাবি যতদিন পর্যন্ত না মানা হবে ততদিন পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলতে থাকবে। তিনি বলেন: দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ২৩ নভেম্বর থেকে সভা, বিক্ষোভ মিছিলসহ ধর্মঘটের মত কর্মসূচিও পালন করে দেশের ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর শ্রমিকরা। এর মধ্যে রাজশাহীতে একটি, খুলনায় নয়টি, নরসিংদীতে একটি ও চট্টগ্রামে একটি। দাবি আদায় না হওয়ায় আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।