তালগোল পাকানো হারে সিরিজ হাতছাড়া

ক্যারিবীয়দের ‘ক্রিসমাস গিফট’

টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ হারের পর টি-টুয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে উইন্ডিজ। শনিবার সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫০ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে সফরকারীরা। ৩৭ দিনের লম্বা সফরে ক্রিসমাসের আগে একটি ট্রফি হাতে নিয়ে দেশে ফিরতে পারছে তারা।

উইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েট টি-টুয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে বলেছিলেন, দেশে লোকজনের একটা ক্রিসমাস উপহার পাওনা হয়ে আছে। আমরা আশা করছি, এই বছরটা আমরা একটা জয় দিয়ে শেষ করতে পারব।

ক্যারিবীয়দের দেয়া ১৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব আল হাসানের দল ৩ ওভার আগেই গুটিয়ে যায় ১৪০ রানে। ব্যাটসম্যানদের ভুলে পূর্ণাঙ্গ সিরিজের তিনটি ট্রফি জমা হল না টাইগার শোকেসে।

ঝড়ের গতিতে আসছিল রান। ঝড়ের বেগ আরও বাড়াতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। সৌম্য সরকার লংঅনে ক্যাচ তুলে দেয়ার পর সাকিব ২২ গজে নেমেই খেলেন একই ধরণের শট। একই জায়গায় দাঁড়িয়ে পরপর দুটি সহজ ক্যাচ লুফে নেন শেলডন কটরেল। বাঁহাতি স্পিনার ফাবিয়ান অ্যালেন নিজের প্রথম ওভারেই ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের মোড়।

উইকেট বিলিয়ে আসার মিছিলে ব্যতিক্রম কেবল লিটন দাস। এ ওপেনার ২৫ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে আউট হওয়ার আগেই অবশ্য ভেঙে যায় জয়ের স্বপ্ন। লিটনের বাহারি সব শটে জেগে ওঠা শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে পাওয়ের প্লে শেষ হওয়ার আগেই। ৬ ওভারের মধ্যে ৪ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ আর প্রতিরোধ গড়তে পারেনি।

শেষে মেহেদী হাসান মিরাজের ১৯ ও আবু হায়দার রনির ২২ রানের অপরাজিত ইনিংস কেবল হারের ব্যবধান খানিকটা কমিয়েছে।

শুরুতে বাংলাদেশের ৫০ রান চলে আসে ৩.৫ ওভারে, তামিম ইকবালের উইকেট হারিয়ে। তখনও গ্যালারিতে উৎসবের রেশ। ‘লিটন-লিটন’ কোরাসে মুখর থাকে মিরপুর। আসল বিপত্তি ইনিংসের পঞ্চম ওভারে।

৬ বলে ৮ রান করে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তামিম সাজঘরে ফেরেন রানআউট হয়ে। দলীয় সংগ্রহ তখন ১.৪ ওভারে ২২। ১০ বলে ৯ রান করে সৌম্য যখন আউট হন দলের রান তখন ৪.২ ওভারে ৬৫। তখন দরকার ছিল ধরে খেলার। কিন্তু আরও আগ্রাসী হতে গিয়েই খেই হারায় টাইগার ব্যাটিংঅর্ডার।

তার আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে তাণ্ডব চলে উইন্ডিজ ওপেনার এভিন লুইসের। এ ওপেনার পৌষের সন্ধ্যায় ঝরান ছক্কার বৃষ্টি। ৮ ছক্কা ও ৬ চারে তার সাজানো ৩৬ বলে ৮৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস হতাশা বাড়ায় স্বাগতিকের। টাইগার বোলাররা পরে টপাটপ ক্যারিবীয়দের উইকেট তুলে দুইশর আগেই থামিয়ে দেয় প্রতিপক্ষকে। শুরুর ১০ ওভার ১২ করে রান তোলা উইন্ডিজ ৪ বল আগেই গুটিয়ে যায় ১৯০ রানে।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বলে লুইস যখন এলবিডব্লিউ হন, ক্যারিবীয়দের সংগ্রহ তখন ৯.২ ওভারে ১২২/৩। বাংলাদেশের সামনে তখন বিশাল লক্ষ্য চোখ রাঙানি দিলেও পরের অংশে স্বস্তি নামান বোলাররা।

লুইস সাজঘরে ফেরার পর ১০ ওভারে উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা নিতে পেরেছে কেবল ৬৮ রান। ক্যারিবীয়দের আটকে রাখায় বড় অবদান মাহমুদউল্লাহর। এ অফস্পিনার লুইসকে আউট করার পরের বলেই এলবিডব্লিউ করেন শিমরণ হেটমায়ারকে (০)।

ইনিংসের দশম ওভারে জোড়া উইকেট তুললে রানে তোলার গতিও কমে আসে। শেষপর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ নেন তিন উইকেট। সমান তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান।

লিড স্পোর্টস