তারপরও ঈদ হোক খুশির, আনন্দের

আগামীকাল পবিত্র ঈদুল ফিরত। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা দীর্ঘ ১ মাস সিয়াম সাধনার পর খুশিতে ঈদের আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠেন। তবে এ বছর সেই আনন্দে কিছুটা হলেও বাধা হয়েছে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস। যে কারণে আরোপ করা হয়েছে নানান বিধিনিষেধ। তাই এবার সীমিত পরিসরে ঈদের নামাজ ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সারতে হবে।

শুধু করোনাভাইরাসই নয়, এবার বিপদের উপর আরেক বিপদ হয়ে এসেছে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে গত বুধবার আঘাত হানা এই ঘূর্ণিঝড় ওইসব এলাকার মানুষের ঈদ আনন্দে বাধা হয়েছে। সেই ঝড়ে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেকগুলো বাঁধা ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকায় লবণাক্ত পানি ঢুকে ফসল, জমি এবং অন্যান্য সম্পদের ক্ষতি করেছে।

তাই এবারের ঈদ অন্যরকম এক পরিস্থিতিতে উদযাপন করতে হচ্ছে দেশবাসীকে। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের কারণে যারা কাজ হারিয়েছেন। অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক সংকটে আছেন। এর বাইরে যারা ‘দিন এনে দিন খায়’ তাদের অবস্থা আরও শোচনীয়। অনেকের কাছে টাকা না থাকায় গ্রামের বাড়িতেও ফিরতে পারেননি। এমন আরও নানা ধরনের সংকটে আছে মানুষ।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাসের এই পরিস্থিতিতে তিনি ঘরে বসে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে অনুরোধ করেছেন। পাশাপাশি সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, এই দুঃসময়ে দরিদ্র প্রতিবেশী, গ্রামবাসী বা এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়াতে। তাতেই ঈদের আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করছেন।

আমরাও প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানের সঙ্গে একমত। ধনী-গরীব সবাই মিলে এক সাথে দাঁড়ালে যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি জয় করা সম্ভব। যার আছে, আর যার নেই- তারা মিলেমিশে ঈদের খুশির অংশীদার হবেন- এটাই আমাদের চাওয়া।

এটা ঠিক, অন্য বছরগুলোর মতো করে এই ঈদে কোলাকুলি করে পরস্পরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যাবে না। বাইরে ঘুরতে যাওয়া সম্ভব হবে না। এমনকি আত্মীয়দের বাড়িতেও বেড়ানো যাবে না। তবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের খোঁজখবর নেয়া সম্ভব এখন।

কেননা এরই মধ্যে করোনোভাইরাস আমাদেরকে আস্তে আস্তে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অভ্যস্ত করে তুলছে। অনেক কাজই এখন হচ্ছে অনলাইনে। অনেকেই ধারণা করছেন, এই ভাইরাসের কারণে হয়তো আগের মতো করে মানুষ তার আর্থ-সামাজিক জীবন ফিরে পাবে না। কিন্তু জীবন তো থেমে থাকবে না। সে চলবে তার নিজস্ব গতিতে।

আমাদের চাওয়া সবকিছুর পরও মানুষের জীবন আনন্দ আর খুশিতে ভরে উঠুক। একদিন সবই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে- এটাই আমাদের প্রার্থনা। সবাইকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।

আম্পানঈদঈদুল ফিতরকরোনাভাইরাসপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা