জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্বরত রোভার স্কাউটের তিন সদস্যকে লাঞ্ছনার প্রতিবাদ এবং অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার সদস্যরা। পরে প্রশাসনের বিচারের আশ্বাসে বিশ্বাস স্থাপন করে পূণরায় কর্মে যোগদান করেন তারা।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে কর্মবিরতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে রোভার স্কাউট সদস্যরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরুর দিন দর্শন বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিদ, কাইয়ুম ও আরিফ নতুন কলা ভবনে দায়িত্বরত তিন রোভার সদস্যকে লাঞ্ছিত করেন। পরবর্তীতে রোভার সদস্যরা বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়।
লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, গত রোববার ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা চলছিল। দুপুর ২টায় নতুন কলা ভবনে চতুর্থ শিফটের পরীক্ষায় অংশ নিতে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ভবনে প্রবেশ করছিলেন। এ সময় দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিদ অনুষদ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে। শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত স্কাউট সদস্যরা তাকে বাধা দিলে তিনি তাদের ওপর চড়াও হন। এ সময় রাফিদ স্কাউট সদস্যদের অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করেন। পরে ভবনে ঢুকতে ব্যর্থ হলে রাফিদ তার বন্ধু কাইয়ুম ও আরিফকে ডেকে আনেন। এরপর তারা তিনজনই স্কাউট সদস্যদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্তদের ব্যাপারে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
এ বিষয়ে জাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রোভার মেট খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়েছি। কিন্তু প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ না নিয়ে বরং সমঝোতার চেষ্টা করেছে। বিচারের দাবিতে আমরা মানববন্ধন করি। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমাদের প্রতিবাদের মুখে বিকেলে আলোচনায় বসার প্রস্তাব করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে আমরা দ্বিতীয় শিফট থেকে দায়িত্বপালনে যোগ দিয়েছি।’ এ সময় ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে চলমান ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্বপালন থেকে বিরত থাকার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘তারা আজ মানববন্ধন করবে সেটা আমাদেরকে জানায়নি। জানালে তাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলতাম। আমরা জেনেছি তিনজন শিক্ষার্থী তাদেরকে লাঞ্ছিত করেছে। অভিযুক্তদেরকে শোকজ করেছি। স্বাভাবিক নিয়ম হলো শোকজ জানানোর ৭ দিনের মধ্যে তারা তাদের বক্তব্য জানাবে। তবে যেহেতু তারা বলছে বিষয়টার দ্রুত সমাধান করার, সেহেতু আজকে আবারো তাদের সঙ্গে বসবো।’