প্রতিবারের মতো শীতকে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক রাজধানীখ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘হিম উৎসব-২০১৯’।
‘সু আশায় কেটে যাক কু আশার ঘোর’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে জাবি এ ক্যাম্পাসে ব্যতিক্রমধর্মী হিম উৎসব শুরু হবে আগামী ১৭ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার)। চলবে ১৯ জানুয়ারি (শনিবার) পর্যন্ত।
প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে চলবে গভীর রাত পর্যন্ত।
উৎসবে থাকছে ব্যতিক্রমধর্মী সব আয়োজন। লোকজ গান, শাস্ত্রীয় সংগীত, গাজীর গান, আদিবাসী নাচ, সাপ খেলা, লাঠি খেলা, আর্ট ক্যাম্প, কনসার্ট, পেইন্টিং ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠান।
স্বপ্নাতুর মানুষদের সুর, শব্দ ও রঙ আর রসে ভরিয়ে তুলতে শীত বরণীয়া এ হিম উৎসবের আয়োজন করেছে ‘পরম্পরায় আমরা’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
উৎসবের আয়োজক ‘পরম্পরায় আমরা’র সংগঠকরা জানান, ‘আমরা এখন বাস করছি এমন একটা সময়ে যখন আমাদের মাঝ থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের লোকজ সংস্কৃতি। শীতের রুক্ষতার ন্যায় এক অদ্ভুত অন্ধকার গ্রাস করে নিচ্ছে আমাদের গান, কবিতা, ভাষা আর আমাদের সংস্কৃতিকে।’
১৭ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) বিকাল তিনটায় অমর একুশে পাদদেশ থেকে হিম যাত্রার মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন হবে। সাড়ে তিনটায় সাপ খেলা ও লাঠি খেলা, সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় আদিবাসী নাচ, সাড়ে ছয়টায় সঙ যাত্রা এবং সন্ধ্যা সাতটায় অনুষ্ঠিত হবে গাজীর গান। এছাড়াও জহির রায়হান মিলনায়তন চত্বরে দিনব্যাপী থাকবে পেইন্টিং ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
১৮ জানুয়ারি (শুক্রবার) উৎসবের দ্বিতীয় দিন সকাল দশটায় জহির রায়হান মিলনায়ত চত্বরে আর্ট ক্যাম্প, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে শাস্ত্রীয় সংগীতানুষ্ঠান। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে দিনব্যাপী থাকবে পেইন্টিং ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
১৯ জানুয়ারি (শনিবার) উৎসবের শেষ দিন সকাল এগারোটায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে দিনব্যাপী থাকবে পেইন্টিং ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
২০১৫ থেকে ধারাবাহিকভাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই উৎসব। নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি একদল তরুণের ভালোবাসা আর দর্শক-শ্রোতাদের আগ্রহকে বিবেচনায় এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী মিলে এই উৎসবের আয়োজন করে আসছে।
গত বছরে জানুয়ারিতেও ‘হিমদেশে উষ্ণ হোক প্রাণ’ স্লোগানে তিন দিনব্যাপী আর্ট ক্যাম্প, বাউল গান, কাওয়ালি গান, পালাগান, চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।