গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচন ইসির সেমিফাইনাল

চলতি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গেল সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা সমালোচনা থাকায় এবারের নির্বাচন দেশের চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য একটি বড় পরীক্ষা। সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের সামনে দেশের দুইটি বড় সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের দায়িত্ব, গাজীপুর ও খুলনাতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় রাজনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। নানা অভিযোগ-উপদেশ আর বর্জন-ফিরে আসার মাধ্যমে চলছে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড।

দুই সিটিতে নৌকা-ধানের শীষের লড়াই যেন ইসির জন্য সংসদ নির্বাচনের সেমিফাইনাল। স্থানীয়ভাবে নির্বাচন হলেও ওই দুটি সিটি কর্পোরেশনের মনোনয়ন, ইশতেহার ও প্রচারণার খবর বেশ গুরুত্বের সঙ্গে গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ পাচ্ছে।

গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আগামী ১৫ মে ভোটগ্রহণ হবে। সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটাররা বেশ খোশ মেজাজে থাকলেও নানা ইস্যুতে জাতীয় নেতৃবৃন্দও বিভিন্ন সময় নানা তথ্য ও বক্তব্য দিয়ে ওই নির্বাচনের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। কোনো কোনো সময় সৃষ্টি হচ্ছে সাময়িক উত্তেজনা, তবে এসবই প্রচলিত রাজনীতির অংশ বলেই আমাদের মনে হয়েছে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশ থেকে বিএনপি সন্ত্রাসীদের জড়ো করছে বলে অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আর খুলনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও তাদের মুক্তির দাবিতে দলটির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু নিবার্চনী প্রচার কার্যক্রম সাময়িক স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে মাঠ গরম করেছেন, যদিও ইতোমধ্যে তিনি প্রচার কার্যক্রম পুনরায় শুরু করেছেন। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি থাকলেও নির্বাচন কমিশন তা নাকচ করে দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে শক্তিশালী করা ও নিয়মিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সম্পৃক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। আমাদের দৃষ্টিতে এখন পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক চললেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দুই সিটিতে জাতীয় নেতৃবৃন্দ মনোযোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেবার পর থেকে এখন পর্যন্ত যতগুলো ছোটবড় নির্বাচন হয়েছে, তা যথেষ্ট অংশগ্রহণমূলক ও আপাতদৃষ্টিতে নিরপেক্ষ হয়েছে বলা যেতে পারে। সেই বিচারে গাজীপুর ও খুলনার নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারলে সংসদ নির্বাচনের পথ আরও মসৃণ হবে বলে আমাদের ধারণা।

নির্বাচন ও ভোটের সংস্কৃতিকে বেগবান করতে নির্বাচন কমিশনসহ সকল রাজনৈতিক দল যথাযথভাবে কাজ করলেই গণতান্ত্রিক ধারা শক্তিশালী হবে। জনগণ ভোট দিতে চায়, তাদের ভোটের মাধ্যমে সব পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে উন্নয়ন-অগ্রতির গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখবে বলে আমাদের আশাবাদ।

সম্পাদকীয়