ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২

রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে দুই জন নিহত হয়েছে। শনিবার সকালে এ দু’টি ঘটনা ঘটে।

রাজধানীর বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান: সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী এক নারীকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয় জনতা। এতে তার মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি জানান: ওই নারীর চলাফেরা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় স্থানীয়রা ধারণা করেছিলেন ওই নারী এলাকায় শিশুদের অপহরণ করতে এসেছিলো।

নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মর্গে রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছে। শনিবার সকালে সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় প্লে গ্রুপের এক শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সন্দেহে এ ঘটনা ঘটে।

গণপিটুনিতে নিহতের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী স্কুল শিক্ষক সাঈদ আহমেদ জানান: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি আল আমিন নগর এলাকায় আইডিয়াল ইসলামীক স্কুলের সামনে থেকে সকাল আটটায় স্কুলের প্লে গ্রুপের এক শিক্ষার্থীকে এক যুবক জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় তিনি স্কুলের সমানে একটি ফার্মেসিতে বসে ছিলেন। শিক্ষার্থী তাকে দেখে স্যার স্যার বলে চিৎকার করলে ওই যুবক নিজের মেয়ে বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু তিনি শিক্ষার্থী ও তার পিতাকে চেনেন বলে ওই যুবককে দাঁড়াতে বললে সে একটি রিকশা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে ডিউটি পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ তিনশ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া দুপুরে মিজমিজি এলাকায় ছেলে ধরা সন্দেহে আসমা আক্তার নামে এক নারীকে আটক করে মারধর করেছে এলাকাবাসী। ওই মহিলা স্থানীয় ইটালী প্রবাসী বিল্লালের বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানেও তাকে মারধর করা হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মহিলাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে সে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে আসমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবাস চন্দ্র সাহা বলেন: ছেলে ধরা গুজবে এমন ঘটনা ঘটছে। সিদ্ধিরগঞ্জে গণপিটুনিতে একজন নিহত ও এক মহিলা আহত হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

গণপিটুনিনিহতরাজধানী