ছাত্রলীগে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে এর সমাধান তার কাছে নেই জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন: এ বিষয়ে আমাদের যে চারজন সহকর্মী দায়িত্বে রয়েছেন তারা জবাব দিতে পারবে।
শুক্রবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
গত ১৩ মে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর থেকেই চলছে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতাদের আন্দোলন। বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, ত্যাগীদের বাদ দিয়ে ব্যবসায়ী-চাকরিজীবী-ভিন্ন মতাবলম্বীদের কমিটিতে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে৷
২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আজ থেকে আমরণ অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। বৃহস্পতিবার তারা এই ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে কথাও বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নির্দেশনা দিয়েছিলেন: বিতর্কিতেদর দ্রুত সময়ে কমিটি থেকে বাদ দিতে। কিন্তু মাস পেরিয়েও সমাধান হয়নি সে বিতর্কের।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন: ছাত্রলীগের ব্যাপারে আমাদের চারজন সহকর্মীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব দিয়েছেন। ছাত্রলীগ সম্পর্কে আপনারা যদি কিছু জানতে চান যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত তারা জবাব দিবেন।
যদি এই চার নেতা ব্যর্থ হন তাহলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন: তারা সফল কি ব্যর্থ তার বিচার প্রধানমন্ত্রী করবেন। আমি নিজেও এ বিষয়ে খুব বেশি কিছু একটা জানি না, অসুস্থ হয়ে বিদেশে ছিলাম। এ বিষয়ে অনেক কিছু আমার জানা নাই। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ভালো বলতে পারবেন।
ছাত্রলীগের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের চার নেতা হলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম ও বি এম মোজাম্মেল।
বিএনপি বিচারহীনতায় বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলো জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন: যে দল দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, যে দলের প্রধান দুর্নীতির কারণে জেলে বন্দী, যে দলের গঠনতন্ত্র দুর্নীতির পক্ষে তৈরি করা হয়েছে, সেই দলের মুখে বিচারহীনতার সংস্কৃতির কথা শোভা পায় না। বিএনপি বিচারহীনতায় বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলো।
হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ার কারণে এখন সাধারণ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন বলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্যের বক্তব্যের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
রিফাত হত্যার ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন: এখন পর্যন্ত তিনজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। সবকিছু রাতারাতি সম্ভব হয় না। যারা অপরাধ করেছে সকলকেই বিচারের আওতায় আনা হবে। অপরাধী অপরাধ করে পালিয়ে থাকার চেষ্টা করবে এটাই স্বাভাবিক। বাকিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।
আওয়ামী লীগের সদস্য নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন: জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অনেক নতুন মুখ আওয়ামী লীগে অংশগ্রহণ করেছে, এদেরকে সদস্য করা হবে।
জামায়াত-বিএনপিকে সদস্য করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন: জামায়াত বিএনপিকে সদস্য করার প্রশ্নই আসে না। তবে যাকে সদস্য করা হবে তার ব্যাপারে খতিয়ে দেখা হবে।
তিনি বলেন: জামাত পরিবার বিএনপি পরিবার অথবা যুদ্ধাপরাধী পরিবারের লোককে সদস্য করা হবে। কারণ ৪৭ বছর পরে এমন বিষয় দেখার যুক্তিকতা নেই। যাকে সদস্য করা হবে তার ব্যাপারে খতিয়ে দেখা হবে।
নতুনরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে এগিয়ে আসুক আমরা তাদেরকে স্বাগত জানাবো। নতুন ফুল ফুটুক এটা আমরা চাই।
জামায়াত এখন দেশ প্রেমিক দল হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে এ ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন: জামায়াতের কার্যক্রমের মাধ্যমে দেখা যাবে তারা দেশ প্রেমিক হয়েছে কিনা। আমি হঠাৎ করে বললাম আমি ভালো হয়ে গেলাম এটা তো আর গ্রহণযোগ্য হবে না। তাদের কার্যক্রমে এটা প্রকাশ পাবে।
আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন: তিন বছরের মধ্যে সম্মেলন করার নিয়ম। আমাদের গঠনতন্ত্র মেনে কার্যক্রম চলছে এবং এই বছরের মধ্যেই সম্মেলন করা হবে।