ছবিতে দেখুন যে অবস্থায় আছে এফডিসি

জৌলুস হারাতে বসেছে চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (এফডিসি)। আগের মতো সেই জমজমাট অবস্থা আর নেই। করোনার প্রকোপে চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘর বলা এই জায়গা একেবারে মৃতপ্রায়। মূল ফটকে দর্শনার্থীদের ভিড়, ফ্লোরে ফ্লোরে তারকা সমাগম সবকিছুই এখন সোনালী অতীত! রবিবার দুপুরে এফডিসি ঘুরে যে চিত্র দেখা গেল মুঠোফোনে ধারণকৃত কিছু স্থিরচিত্র তুলে ধরা হলো। ছবি তুলেছেন: নাহিয়ান ইমন

এফডিসির প্রধান প্রবেশ পথ। একসময় দেখা যেত সিনেমাপ্রেমীদের জটলা। চিত্রতারকাদের দেখতে ভিড় জমাতেন সবাই । এখন তার ঠিক উল্টোচিত্র। তাই ভিড়ও চোখে পড়ে না। প্রবেশ পথে নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকেন কয়েকজন কর্মী। 

প্রবেশ পথে দিয়ে ঢুকলেই বাঁ পাশে ছিল ৩ ও ৪ নাম্বার শুটিং ফ্লোর। যেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন নরম মাটিতে জমেছে ঘাস। এখানেই গড়ে উঠবে ১৫ তলা আধুনিক ভবন। এফডিসির আধুনিকায়ন করার জন্য ৯৪ কাঠা জমির ওপর নতুন এ ভবন নির্মাণের করছে সরকার। হোটেল, কর্পোরেট অফিস, চ্যানেলগুলোর চাহিদা অনুযায়ি ২টি ফ্লোর রাখার প্ল্যান আছে। থাকবে ফুডকোট, বিআরটিএ অফিস। এছাড়া ভবনের টপফ্লোরে থাকবে আধুনিক মাল্টিপ্লেক্স।

এফডিসির ৮ নাম্বার ফ্লোরের বারান্দা দিয়ে নামলেই চোখে পড়বে বসার জায়গা। শুটিং না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন এফডিসি সংশ্লিষ্ট কয়েকজন। কেউ প্রডাকশনে আবার কেউ এক্সট্রা শিল্পী হিসেবে শুটিং করেন বলে জানান।

এফডিসির সেই ক্যান্টিন। আগের চেয়ে কিছুটা পরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট একজন চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, মাসে ৩০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। শুটিং কমে যাওয়ায় ও করোনা আসার পর থেকে ব্যবসায় লোকসান গুণতে হচ্ছে। আগে দৈনিক গড়ে ৩৫ হাজার টাকা বিক্রিবাট্টা হলেও এখন দৈনিক ৫ হাজার টাকার খাবার বিক্রি করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ক্যান্টিনে চা-সিংগাড়া থেকে মাছ-ভাত-মাংস, বিকেল সন্ধ্যায় পিয়াজু, পুরিসহ হালকা নাস্তার কমবেশি সব খাবার পাওয়া যায়।

এফডিসির পরিচালক সমিতি। ঘুরে দেখা গেল, চিত্রপরিচালক শাহীন সুমন, জাকির হোসেন রাজু, শিল্পী চক্রবর্তী, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, বন্ধন বিশ্বাসসহ আরও কয়েকজন চলচ্চিত্র নির্মাতা পরিচালক সমিতির বারান্দায় বসে গল্প করছিলেন। 

পরিচালক সমিতির পাশেই অবস্থিত শিল্পী সমিতি। নির্বাচনকে ঘিরে এই সংগঠনটি পরিচিতি পেয়েছে। ঘুরে দেখা গেল তেমন কেউ নেই। অফিস সহকারীদের একজন জানান, বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে সমিতির দায়িত্বে থাকা দুএকজন অফিসে আসেন। 

শিল্পী সমিতি থেকে প্রশাসনিক ভবনে যাওয়ার পথ। দু-পাশের দুটি দেয়াল হচ্ছে শুটিং ফ্লোরের। লাল রঙা ফ্লোরটির নাম জমিস ফ্লোর। এফডিসি ঘুরে দেখা যায়, শুধুমাত্র ৯ নাম্বার ফ্লোরে তানিম রহমান অংশুর পরিচালনায় একটি টিভি ফিচার ফিল্মের শুটিং হচ্ছে। আদালতের সেট বানিয়ে ভিতরে শুটিং করছেন তারিন, মিথিলা, মনোজ, তানজিন তিশা।

এফডিসির প্রশাসনিক ভবন। নিয়মিত কর্মকর্তারা এখানে অফিস করেন। ভবন সংলগ্ন এখানে বিভিন্ন সিনেমার সেট তৈরি করে শুটিং করা হয়। পাশেই প্রযোজক সমিতির অফিস। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’ ছবির সেট তৈরি হচ্ছে। 

তপু খানের পরিচালনায় ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’ ছবির নির্মিত সেটে চলতি সপ্তাহেই শুটিং করবেন শাকিব খান, শবনম বুবলীসহ অনেকেই। জানা যায়, টানা এক সপ্তাহ এই সেটে ছবিটির শুটিং হবে। বর্তমানে চলছে সেট নির্মাণের তোড়জোড়।

এফডিসির শিল্পী সমিতির সামনেই এই বাগানটি অবস্থিত। এক সময় শতশত সিনেমার শুটিং এখানে হলেও এখন এখানে মানুষের পা তেমন পড়ে না। বড় বড় ঘাস ও লতাপাতায় ঢাকা পড়েছে বাগানটি।

সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে এফডিসির বিখ্যাত ঝর্ণা শুটিং স্পট। যদি কেউ সেখানে যেতে চান তবে তাকে পা ভিজিতে যেতে হবে। দীর্ঘদিন ধরেই ঝর্ণা শুটিং স্পটে শুটিং হয় না। কাজেই এফডিসির নামকরা এই জায়গাটি অবহেলায় পড়ে আছে।

এফডিসিপরিচালক সমিতিবিএফডিসিলিড বিনোদনশিল্পী সমিতি