প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ করা হবে। সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। চার লেনের রাস্তার সাথে সংযুক্ত হবে কর্ণফুলি টানেল, যাতে মানুষ খুব সহজেই কক্সবাজার পৌঁছে যেতে পারে।
রোববার বন্দরনগরী চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের খনন এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর পতেঙ্গার সাগর পাড়ে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন: আমার শ্রমের বিনিময়ে যদি এ দেশের মানুষ একটু ভালোভাবে বাঁচতে পারে, শান্তি পায়, তাতে অন্তত আমার বাবা শান্তি পাবে। কারণ আমরা দেখেছি আমার বাবা-মা সবসময় এ দেশের মানুষকে কীভাবে ভালো রাখা যায় তা নিয়েই আলোচনা করতেন। সেজন্য কাজ করতেন।
তিনি বলেন: আজ বাংলাদেশ বিশ্বে সম্মানজনক পর্যায়ে এসেছে। আমরা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলের মাধ্যমে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলাম। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এটাই প্রথম এত বড় টানেল।
চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিনকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন: টানেল নির্মাণে অনেক আন্দোলন করেছেন তিনি। কারণ, তিনি ভাবতেন কর্ণফুলী নদীর উপর বেশি বেশি ব্রিজ নির্মিত হলে নদী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু আজ তিনি এই টানেল দেখে যেতে পারলেন না এটা অত্যন্ত দু:খজনক।
চট্টগ্রামের উন্নয়নের নানা চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন: প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অওয়ামী লীগ সরকার করেছিলো এখানে। এছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করে দিলাম। আর যানজট হবে না চট্টগ্রামে। এর ফলে যোগাযোগটা আরও দ্রুত হবে। এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার আমরা করে দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন: শুধু শহরভিত্তিক নয়, তৃণমূল পর্যায় থেকে যেনো মানুষ উন্নত হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাবো। গ্রামের মানুষ যাতে আরও উন্নত হতে পারে সকল নাগরিক সুবিধা পেতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করছি। ২০২২ সালে টানেল নির্মাণের কাজ শেষ হবে। আমরা মনে করি এরপর এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নয় হাজার আটশত আশি কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ সহায়তা তিন হাজার নয়শত সাতষট্টি কোটি একুশ লক্ষ টাকা এবং চীন সরকারের অর্থ সহায়তা পাঁচ হাজার নয়শত তের কোটি ঊনিশ লক্ষ টাকা।
দু’টি টিউব সম্বলিত মূল টানেলটির দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার এবং টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং ৭২৭ মিটার ওভার ব্রিজ।
প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৩২ ভাগ এবং ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম শহরকে বাইপাস করে সরাসরি কক্সবাজারের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে চট্টগ্রাম শহরের যানজট কমাসহ যাতায়াতের সময় অনেকাংশে কমে যাবে।