ঘোষণা ছাড়াই ভোগান্তির ধর্মঘট কেন?

নতুন সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে শুরু থেকে নানা পর্যায়ে আলোচনা চললেও তেমন কোনো প্রতিবাদ ছিল না। পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারাও শুরু থেকেই এই আইনের পক্ষে কথা বলেছেন। তবে নতুন আইন কার্যকরের মুহূর্ত থেকে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।

সোমবার সকাল থেকে কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সড়ক পরিবহন আইন সংস্কারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে অঘোষিত কর্মবিরতি পালন করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

এটা ঠিক যে, নতুন সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে আরও ব্যাপক আকারে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। নতুন আইনের বিভিন্ন ধারা এবং জেল-জরিমানার বিষয়ে অনেকের গঠনমূলক আলোচনা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর আইনেরও বিকল্প নেই। আইন কার্যকর হওয়ার আগে থেকে ইতোমধ্যে অনেককে শৃঙ্খলায় আসতেও দেখা গেছে।

প্রতিদিন সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনার অনেক খবর আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। সড়কের শৃঙ্খলা ও দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের দেয়া তথ্যও ভয়ঙ্কর। এছাড়া নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনও আমরা দেখেছি। এসব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় কঠোর আইনের বিকল্প নেই।

সড়ক পরিবহনে নতুন আইন প্রনয়ণ করা তাই জরুরি ছিল। তাই সব পক্ষের কথা শোনার মানসিকতা সংশ্লিষ্টদের থাকতে হবে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, গায়ের জোরে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার অধিকার কেউ পেয়ে গেছেন। রাস্তায় চলতে গেলে নিয়ম মেনেই চলতে হবে, অনিয়ম করে পার পাওয়া যাবে না; এটা সবাইকে বুঝতে হবে।

তবে যাদের দিয়ে আইন প্রয়োগ করা হবে, তারাও যাতে নিয়ম মেনে চলেন, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। নতুন আইন আসার পরও চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকের আইন না মানার মানসিকতা আমরা দেখেছি। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আমরা মনে করি, জোর করে বা জরিমানা আদায় করে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো যাবে না। এজন্য সচেতনতামূলক ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিক, চালক ও যাত্রীদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। সবাই সচেতন না হলে সড়ক আরও ভয়ঙ্কর মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠবে। এমন অবস্থার পরিবর্তনে সবাইকে এগিয়ে আসতে আমরা সব পক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি।

ধর্মঘটবাস ধর্মঘটসড়ক আইনসড়ক পরিবহন আইনসম্পাদকীয়