জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিবির কর্মী সন্দেহে সাবেক দুই শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গী এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় তাদেরকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে সহকারী প্রক্টর মহিবুর রউফ শৈবাল বলেন, উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
আটককৃতরা সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪১তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সাদ শরীফ এবং তার সহযোগী প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নূরুল আমিন। তাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায়। এদের মধ্যে সাদ শরীফ সরাসরি শিবিরের সাথে যুক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে প্রক্টর অফিস থেকে জানানো হয়।
প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা গেছে: বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের পূর্ব নির্ধারিত মশাল মিছিল কর্মসূচি চলার সময় তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
তাদের আটকের বিষয়ে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন: ‘মশাল মিছিলে শিবির ও ছাত্রদল অংশ নেবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সারাদিন ক্যাম্পাস পর্যবেক্ষণ করতে থাকি। মিছিল চৌরঙ্গী আসলে তাদের দুজনকে গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে মোটরসাইকেলসহ আটক করি। আটকের পর তাদের মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপে শিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক তথ্য পাওয়া যায়। চলমান আন্দোলনে কারা টাকা দেয় তার প্রমাণ মোবাইলে পাওয়া গেছে। গতমাসে তারা এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা পাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও কোন কোন শিক্ষক টাকা দেয় সে তথ্যও তাদের কাছে পাওয়া গেছে। বিদেশ থেকে তাদের সাথে কারা কারা যোগাযোগ করে তারও প্রমাণ মিলেছে।’
তিনি আরও বলেন: ‘ভোলার ঘটনায় কিভাবে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করা যায় তারও কথোপকথন তাদের কাছে আছে। এছাড়া তাদের কাছে সেক্টর কমান্ডারসহ কোন কোন সাথী তাদের সাথে যোগাযোগ করে তারও একটি তালিকা পাওয়া গেছে। তারা সাভারের একটি কোচিংয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাদ শরীফ বলেন: আমি কোনো সক্রিয় রাজনীতির সাথে যুক্ত নই। চৌরঙ্গী এলাকা থেকে কয়েকজন শিক্ষক আমাদের আটক করেন। ক্যাম্পাসের আন্দোলনের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।
আটকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আশুলিয়া থানায় মামালা করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেষ্টা করছে প্রশাসন।
ঘটনার পর আন্দোলনকারীরা রাতেই প্রক্টর অফিসে আসেন। সেসময় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রক্টর অফিসকে ঘিরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।