গুলি চালানোর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন মমতাই: অমিত শাহ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ যুবকের মৃত্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণকেই দায়ী করলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার শান্তিপুরে বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের সমর্থনে প্রচারে এসে একথা বলেন তিনি। সঙ্গে মৃত্যু নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতি করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

হিন্দুস্থান টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।

অমিত শাহ বলেন, ‘চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণে একটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটেছে। একটি বুথে কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি হামলা করে। সিএপিএফের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। যখন সিএপিএফ আত্মরক্ষায় অস্ত্র রক্ষা করতে গুলি চালায় তখন চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এ অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা’।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘যেভাবে এই ঘটনার রাজনীতিকরণ হচ্ছে তা এর থেকেও দুঃখজনক। আমি মমতা দিদির বিবৃতি দেখেছি। ওই বুথেই সকালে আনন্দ বর্মনকে হত্যা করা হয়েছিল। গুন্ডারা ভোটগ্রহণ বন্ধ করতেই খুন করেছিল। সেই বুথেই হামলা করা হয়। ওই বুথেই সিআইএসএফের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু মমতা দিদি শুধুমাত্র ৪ জনকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আনন্দ বর্মনের মৃত্যুতে ওনার কিছু যায় আসে না। মৃত্যুতেও তোষণের রাজনীতি করে উনি বুঝিয়ে দিলেন বাংলার রাজনীতিকে কত নীচে নামিয়েছেন মমতা দিদি’।

শাহের দাবি, এই ঘটনায় মমতার আচরণ বাংলার সংস্কৃতি বিরোধী। তিনি বলেন, ‘আনন্দ বর্মনের মৃত্যুতে আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি। বাকিদের মৃত্যুতেও আমরা দুঃখিত। মৃত্যু সব সময় রাজনীতির উর্ধে থাকা উচিত। কিন্তু উনি আনন্দ বর্মনের মৃত্যু নিয়ে কোনও কথা বলেননি। কারণ, আনন্দ বর্মন রাজবংশী সম্প্রদায়ের সদস্য। এই ধরণের রাজনীতি বাংলার সংস্কৃতির পরিপন্থী’।

মমতাকে শাহের প্রশ্ন, ‘এই শীতলকুচিতেই মমতা দিদি কয়েকদিন আগে ভাষণে বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী এলে তাদের ঘেরাও করো। তাদের ওপর হামলা করো। আমি মমতা দিদিকে সরাসরি প্রশ্ন করছি, আপনার সেই ভাষণ কি এই চার জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী নয়? আপনি যদি ওসব না বলতেন তাহলে ওই চার যুবক সিআরপিএফের ওপর আক্রমণ করার সাহস পেতেন কি? আমি তাদের প্ররোচনা দিয়ে গুলি চালানোর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন’।

এমনকী নিজের বক্তব্যের জন্য মমতার ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন শাহ। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় মমতা দিদির কাছে এখনো সময় রয়েছে। উনি আনন্দ বর্মনের মৃত্যুতেও শোক প্রকাশ করুন এবং যে ভাষণ উনি দিয়েছেন সেজন্য বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চান’।

অমিত শাহ আরও বলেন, ‘একটি ঘটনা ছাড়া মোটের ওপর বাংলায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে।’ সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে তাঁর অনুরোধ, ‘কমিশনের বিধিনিষেধ মেনে চলুন।’

শনিবার শীতলকুচির জোড়পাটকিতে ভোটগ্রহণ চলাকালীন কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় ৪ জনের। বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, গ্রামবাসীরা জওয়ানদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে গুলি চালাতে বাধ্য হয় বাহিনী। ওই ঘটনার দিন কয়েক আগে কোচবিহারে প্রচারে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অমিত শাহমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়