গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে অভিযোগ করেছেন, তার জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলছেন: সরকার নয় বিএনপিই গণতন্ত্রের জন্য এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় হুমকি। দলটি দুর্বৃত্তায়ন চক্রে পতিত হয়েছে বলেও এসময় মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবে বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। স্মরণসভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট।
আওয়ামী লীগের এ মুখপাত্র এ সময় আরও বলেন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে বিএনপি- তারেক রহমান-খালেদা জিয়ার দুর্নীতির সত্য তুলে ধরে বক্তব্য রেখেছেন। তার প্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন এই বক্তব্য নাকি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি স্বরূপ! কিন্তু আসল কথা হলো গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশে বড় হুমকি হচ্ছে বিএনপি। কারণ তারা গণতন্ত্রকে সবসময় বাধাগ্রস্ত করেছে। তাদের জন্মটাই অগণতন্ত্রিক পথে।
জন্মলগ্ন থেকেই দলটি দুর্বৃত্তদের, মুনাফালোভীদের উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দলটির নেওয়া কর্মসূচি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে তিনি, গণতন্ত্র ধ্বংস করে এক দলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েমের অভিযোগ আনেন সরকারের বিরুদ্ধে।
হাছান বলেন: বিএনপিকে দুর্বৃত্তায়নের চক্র থেকে বেরিয়ে এসে গণতান্ত্রিক ধারা জনগণের প্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত হতে হবে। জনগণের দল হতে হলে তাদের কর্মপন্থা পরিবর্তন করতে হবে। আর সেটা করতে হলে দলের নেতৃত্ব পরিবর্তন করতে হবে। তাহলেই তারা জনগণের দল হতে পারবে।
বিএনপি জনগণের দল হয়ে উঠুক এটা আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করে বলে এসময় দাবি করেন তিনি।
বলেন: রাজনীতিতে বণিকায়ণ ও দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। রাজনীতিতে বণিকায়ণ ও দুর্বৃত্তায়ন দেশের জন্য অশুভ। কারণ বণিকায়নরা রাজনীতিতে আসলে তারা সবসময় লাভের আশা করবে আর দুর্বৃত্তরা তারা সবসময় ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বণিকায়ণ ও দুর্বৃত্তায়ন শুরু করেছে জিয়াউর রহমান হাত ধরে এবং এর পূর্ণতা সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাত ধরে বলে দাবি করেন হাছান৷
আওয়ামী লীগের এ প্রচার সম্পাদক বলেন: বণিকায়ণ ও দুর্বৃত্তায়ন যে বিএনপির সৃষ্টি তার অন্যতম প্রমাণ তারেক রহমান। সে একজন প্রতিষ্ঠিত দুর্বৃত্ত যার নেতৃত্বে হাওয়া ভবন ও খোয়াব ভবন পরিচালিত হতো। তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন বানিয়ে বিএনপি দুর্বৃত্ত দলে পরিণত হয়েছে।
এদিকে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরীক কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর জোট ছাড়া বিষয়ক আল্টিমেটামের প্রেক্ষিতে হাছান বলেন: ২০ দলের ভাঙনের শুরু দেখতে পেলাম। এখন ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে নানা ধরনের কথাবার্তা চলছে। ঐক্যফ্রন্টে এখন আর ঐক্য নেই। ধীরে ধীরে অনেকেই ঐক্যফ্রন্ট ছেড়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে মতিঝিলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃত্বে সমন্বয়হীনতা দূরসহ কিছু প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন কাদের সিদ্দিকী। এসকল সমস্যার সমাধান না হলে ৮ জুনের পর ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এসময় বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম,সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এড. শামসুল হক টুকু, সংগীত শিল্পী রফিকুল আলম, এইচডি রুবেল, অভিনেত্রী অরুনা বিশ্বাস, অরুন সরকার রানাসহ অনেকে।