কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাম এমপি।
আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, দেশের শাকসবজি, আলু ও ফলমূল রপ্তানির সম্ভাবনা অনেক। বিভিন্ন ফসল ও খাদ্যে আমরা এখন উদ্বৃত্ত। এ উদ্বৃত্ত ফসল সারা পৃথিবীতে আমরা রপ্তানি করতে চাই। সেজন্য, রপ্তানির বাধাসমূহ দূর করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমাদের প্রস্তুতি প্রায় সমাপ্ত। গত ১ বছরে কৃষিপণ্যের রপ্তানি অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সামনের দিনগুলোতে রপ্তানির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে।
সোমবার ঢাকার ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে শাকসবজি, আলু, ফলমূল ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণীত খসড়া রোডম্যাপের উপর মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় গত জুনে কমিটি গঠন করে। এই কমিটি শাকসবজি, ফলমূল রপ্তানির জন্য ১টি ও আলু রপ্তানির জন্য ১টি মোট ২টি রোডম্যাপ প্রণয়ন করে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি করতে পারলে একদিকে কৃষকেরা লাভবান হবে, অন্যদিকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। সেলক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার। এসময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/ দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধি, রপ্তানিকারক, প্রক্রিয়াজাতকারী ও কৃষক প্রতিনিধিরা মতবিনিময় করেন।
এ সময় শাকসবজি, ফলমূল ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণীত খসড়া রোডম্যাপ উপস্থাপনা করেন কৃষি বিপণন অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ রাজু আহমেদ এবং আলু রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণীত খসড়া রোডম্যাপ উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন এর গবেষণা সেলের প্রধান সমন্বয়কারী ড. মো. রেজাউল করিম।
খসড়া রোডম্যাপ উপস্থাপনায় তারা শাকসবজি, আলু, ফলমূল ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করার পাশাপাশি তা সমাধানের লক্ষ্যে বেশ কিছু সুপারিশ প্রস্তাব করেন।
এই সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করা গেলে কৃষিপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০২১-২২ সালে ১.৬৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (সম্ভাব্য) এবং ২০২২-২৩ সালে (জুন পর্যন্ত) ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (সম্ভাব্য) আয় করা সম্ভব হবে। আলু রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০২২ সালে ৮০ হাজার টন, ২০২৩ সালে ১ লাখ ২০ হাজার টন, ২০২৪ সালে ১ লাখ ৮০ হাজার এবং ২০২৫ সালে ২ লাখ ৫০ হাজার টন আলু রপ্তানি করা সম্ভব বলে খসড়া রোডম্যাপে উল্লেখ করা হয়েছে।