দক্ষিণ এশিয়ায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিতের সংখ্যা তিন কোটি ছাড়িয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারত। তারা এই অঞ্চলে করোনা সংক্রমণে বড় অবদান রাখছে এবং পুরো অঞ্চল জুড়েই টিকার ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। শুক্রবার পর্যন্ত ভারতে প্রায় দুই কোটি ৭০ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে এবং মারা গেছে তিন লাখ ১৮ হাজার ৮৯৫ জন।
গত বছর মহামারি শুরুর পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশে এ মাসেই করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে, যা দেশটিতে মোট মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশ। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ভুটানে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বিশ্বে যথাক্রমে ১৮ শতাংশ ও ১০ শতাংশ। যদিও সংক্রমণ ও মৃত্যুর সরকারি পরিসংখ্যান নিয়ে সংশয় বাড়ছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, সত্যিকারের সংকটের চিত্রটি আরও ভয়াবহ।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত কয়েকদিনে সংক্রমণের সংখ্যা কিছুটা কমায় আশা করা হচ্ছে ভারত দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাত সামলে উঠতে পারছে। তবে এ নিয়েও সংশয় রয়েছে। অভিযোগ আছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরঞ্জামের ঘাটতি থাকায় নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে না। এ পর্যন্ত দেশটির ১৩০ কোটি নাগরিকের মাত্র তিন শতাংশকে পুরোপুরি টিকাদানের আওতায় আনা হয়েছে, যা সবচেয়ে সংক্রমণের শিকার ১০ দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে মার্চ থেকে ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। অথচ এর আগে নরেন্দ্র মোদি সরকারের পক্ষ থেকে উপযাচক হয়ে বিভিন্ন দেশে ছয় কোটি ৬০ লাখ ডোজ টিকা রপ্তানি এবং উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে। এখন পরিস্থিতির কারণে ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ রাখায় সংকটে পড়েছে প্রতিবেশি বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং আফ্রিকার অনেক দেশ।
ভারতের এই সংকটে প্রতিবেশি দেশ হিসেবে আমরাও সংকটে পড়েছি। বাংলাদেশেকে নতুন করে বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আনতে হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে আমরাও এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। করোনা মহামারি থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা হয়তো শিগগিরই পাওয়া যাবে না। তবু আমাদের চেষ্টা করতে হবে।