ওমিক্রনই শেষ নয়, প্রস্তুতি নিতে হবে নতুন ভ্যারিয়েন্টের

বিজ্ঞানীদের সতর্কতা

বিশ্বে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব তিন বছর পার করতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, ওমিক্রনকে করোনার শেষ ধরন ভেবে নিশ্চিন্তে থাকা যাবে না। বরং আরও নতুন ভ্যারিয়েন্টের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

ওমিক্রন ধরন কম গুরুতর হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাকালীন বিধিনিষেধ শিথিল করে দিচ্ছে। ভাবা হচ্ছে, এই ধরনই শেষ ধরন যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে লড়াই করতে হচ্ছে, এরপরই হয়তো এই মহামারি শেষ হয়ে যাবে।

কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা সঠিক নয়। ওমিক্রন ধরন কম গুরুতর কিন্তু এটি অতি সংক্রমক একটা ভ্যারিয়েন্ট, শুধু কয়েকটি দেশই নয় বরং পুরো বিশ্ব ওমিক্রন সংক্রমণে ছাড়িয়ে গেছে একের পর এক নতুন রেকর্ড।

ইয়েল স্কুল অব মেডিসিনের এপিডেমোলজি বিভাগের অধ্যাপক আকিকো ইয়াসাকি বলেন, এই ভাইরাসটি কয়েক মাস পরপরই নতুন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। যখন আমরা ডেল্টার বিপরীতে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার সফলতা উদযাপন করছিলাম ঠিক তখনই ওমিক্রন নতুন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। এই কারণেই আমরা এই ভাইরাসকে স্থানীয় রোগ ভেবে এর সাথে বসবাস করছি।

তবে এটাও স্বস্তির বিষয় যে পুরো বিশ্ব কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতি সামলাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। বিভিন্ন অ্যান্টি ভাইরাল ঔষধ, ভ্যাকসিন এবং ঘরে বসেই অল্প সময়ে কোভিড টেস্ট করার সামগ্রী এখন সহজলভ্য হয়ে গেছে।

বিজ্ঞানীদের মতে এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে তা বলা যায় না। কারণ ওমিক্রন পরবর্তী ভ্যারিয়েন্ট কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা করা যাচ্ছে না। হতে পারে না ওমিক্রনের চেয়ে মৃদু কিংবা ডেল্টার চেয়েও ভয়াবহ।

সিয়াটলের ফ্রেড হাচিনসন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারের এপিডেমোলজিস্ট ট্রেভর বেডফোর্ড বলেন, করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ওমিক্রন রিপোর্ট শনাক্ত হয়েছে। এবং অতি ছোঁয়াছে এই রোগে দেশটির ১০ শতাংশ আক্রান্ত হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তার ধারণা, মার্চের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ইউরোপের অর্ধেকের বেশি এই ধরনে আক্রান্ত হয়ে যাবে।

এরই মধ্যে সাউথ আফ্রিকায় ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্ট বিএ.২ এর সংক্রমণ ছড়িয়ে যাচ্ছে। যা মূল স্ট্রেইনের চাইতেও বেশি সংক্রামক বলে ধারণা করে দেশটির বিজ্ঞানীরা বলছে, এই একই ধরণে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ তুলবে দেশটিতে।

নতুন গবেষণা তথ্য মতে মানুষ এই ধরনে পুনঃসংক্রমিত হতে পারে। কারণ ডেল্টার পরেও মানুষ ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছে এবং টিকা গ্রহণকারী ব্যক্তিরাও তাকে এড়াতে পারেনি।

সাউথ আফ্রিকান মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের প্রধান এক্সিকিউটিভ অফিসার গ্লেন্ডা গ্রে বলেন, যেহেতু বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তীত হচ্ছে এবং নতুন মিউট্যান্ট আসছে তাই আরও নতুন ভ্যারিয়েন্ট আসতে যাচ্ছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করছে বিজ্ঞানীরা।

তাই সবাইকে নতুন স্ট্রেইনের জন্য প্রস্তুত থাকার কথাও বলেন তিনি।

ওমিক্রনকরোনা ভাইরাসডেল্টাযুক্তরাষ্ট্রসাউথ আফ্রিকা