এক অপরিকল্পিত শহর কুমিল্লা

দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছে, জননেত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত উন্নয়নের রূপরেখায় তখন কুমিল্লা শহর যেন ট্রেনের বগিচ্যুত অবস্থায় পড়ে আছে। পথে-ঘাটে ট্রাফিক জ্যাম। শাসনগাছার ব্রিজ যেন কুমিল্লা নগরীর অবহেলিত ও অপরিকল্পিত প্রতিচ্ছবি। পদুয়ার বাজারের কাছে যেভাবে মাটি কেটে উন্নয়ন করার নাম করে হতশ্রী করে ফেলা হয়েছে, তাতে কুমিল্লা শহরে প্রবেশ করাই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। রেসকোর্সের রিজার্ভ পুকুরটি অপরিকল্পিতভাবে ভরাট করে সেটি এখন দোকানপাটে পরিণত হয়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই এখন স্কুল-কলেজ-রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। সুযোগ নিচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ীরা। দলে দলে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীরা যখন বোরকা বা হিজাব পরে বেরিয়ে আসছে, তখন মনে হয় পঁয়ত্রিশ বছরে কি আশ্চর্য বিবর্তন ঘটেছে কুমিল্লার!

একটি প্রগতিশীল শহর বুঝিবা চরম প্রতিক্রিয়াশীল শহরে পরিণত হয়েছে। কুমিল্লা শহর যেভাবে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে, ধর্ম ব্যবসায়ীরা সেভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তলে তলে কাজ করে যাচ্ছে। এটা মোটেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এমনভাবে নগরীর পরিকল্পনাহীনতা দেখতে দেখতে মনে পরে এ শহর এককালে ব্যাঙ্কিংয়ের জন্য বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ছিল। সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে কুমিল্লা নগরী সব সময়ে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে। আজ কুমিল্লায় সে সমস্ত সুন্দর চেতনাবোধ যেন ধুয়ে মুছে যাচ্ছে। কুমিল্লায় বেতার কেন্দ্র স্থাপন করা হলেও সেটি কবে পূর্ণভাবে চালু হবে কেউ জানে না। কুমিল্লায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার পর থেকে যারা ইতোপূর্বে উপাচার্য হয়েছেন, তারা প্রায় প্রত্যেকেই জামায়াত-বিএনপির পদলেহন করেছেন।

সদ্য সাবেক হওয়া উপাচার্য প্রায় প্রতিটি পদেই জামায়াত-বিএনপিদের নিয়োগ দিতে সচেষ্ট ছিলেন। এক ধরনের কার্টেল করে চলেছেন। ফলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ছাত্রছাত্রী যারা বেরুচ্ছে, তাদের মান প্রশ্ন সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুঃখ লাগে, এখানে বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়ার জন্য চক্রান্ত করেছিল পাকিস্তান আমলে ফজলুল কাদের চৌধুরী। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে যে শিক্ষার্থীরা বেরুচ্ছে তারা তেমন কর্ম উপযোগী শিক্ষিত নয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেগুলেটররা একটি কমিটি স্থাপন করতে পারে। সরকারী অর্থ ব্যয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পাঠ-পঠন হচ্ছে, জনগণের কষ্টের ট্যাক্সের পয়সায়, তা যেন বর্তমান সরকারের ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করতে পারে। আসলে সরকারের শুভ উদ্যোগ এখানে এসে পৌঁছাচ্ছে না। বরং মধ্যস্বত্বভোগীরা নিজেদের সুবিধা আদায়ে সচেষ্ট রয়েছে। দেশের উন্নয়নে যেখানে সরকার নিরলস প্রয়াস গ্রহণ করেছে, সেখানে একদল তাদের নিজেদের সুযোগ-সুবিধা আদায়ের পন্থা হিসেবে বিবেচনা করছে। এরা গিরগিটির মতো রং বদলিয়ে আওয়ামী লীগের চেয়ে বড় আওয়ামী লীগার হয়ে উঠছে, অথচ তলে তলে যেন বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আঁতাতকারী।

কুমিল্লা শহর এখন এক অপরিকল্পিত নগরী। যে কুমিল্লা নগরীর গর্ব ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, সেখানে অল্পতেই বৃষ্টি হলে পানি জমে যায়। এটি যেন পড়াশোনার মানের এক ধরনের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে। কুমিল্লা জিলা স্কুলের পড়াশোনার মানও আগের মতো নেই। ফয়জুন্নেছা স্কুলটিতেও প্রগতিশীল শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে লাকসামে নবাব ফয়জুন্নেছার নামাঙ্কিত কলেজটি শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে। কুমিল্লা সরকারী মেডিক্যাল কলেজ যেন নিজেই রুগ্ন। কোন ধরনের সমন্বয় সাধন কুমিল্লা শহরের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পরিলক্ষিত হলো না। বিচ্ছিন্নভাবে যে সমস্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলো এডহক ভিত্তিতে। ফলে একটি উন্নয়ন প্রকল্পের সঙ্গে আরেকটি উন্নয়ন প্রকল্পের সমন্বয় সাধন হচ্ছে না। কুমিল্লা রেলস্টেশন দেখলে মনে হয়, অযথা টাকা ঢেলে অপরিকল্পিত ডিজাইন করা হয়েছে। কুমিল্লা শহরের তীব্র যানজট, জনবিচ্ছিন্ন কিছু কর্মকণ্ড, পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থায় উন্নতির ছোঁয়া না লাগা ততই যেন কুমিল্লা শহরকে পেছনের দিকে টেনে ধরছে। অথচ দেশের উন্নয়নে অন্য জেলাগুলো অংশ নিচ্ছে। কিন্তু কুমিল্লা শহর যেন কেবলই জীর্ণশীর্ণ হয়ে আসছে।

রামবালা, অভয়াশ্রম, মহেশ ভট্টাচার্যের হোমিওপ্যাথি ওষুধের দোকান, বার্ড কোন কিছুই আর যথাযথ কাজ করছে না। কুমিল্লার প্রগতিশীল নেতৃবৃন্দ যেন অনেকটা জড় পাথর হয়ে আছে। স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়নে সরকারের সদিচ্ছার বাস্তবায়নে তাদের ভলেন্টিয়ারি উদ্যোগ থাকা বাঞ্ছনীয় ছিল। কুমিল্লার এই অপরিকল্পিত অব্যবস্থার জন্য ধর্ম ব্যবসায়ী ছাড়াও ইগো প্রবলেম বিরাট সঙ্কটের সৃষ্টি করছে। কোন্দল যেন পিছু ছাড়ছে না। ব্যক্তি জীবন, মহল্লা-পাড়া প্রতিটি স্তরে যেন কোন্দলের ঘূর্ণায়মান চক্রটি সর্বগ্রাসী রূপ নিচ্ছে।

রাস্তাঘাট সংস্কারের কেউ নেই। মনে হয় ভূতের পাঁচ পায়ের মতো পেছনের দিকে কুমিল্লা শহরের বাসিন্দাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী শহরটি আজ যেন বড্ড বেশি নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে সন্দিহান। বড় বেশি ধর্ম ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে যাচ্ছে। ময়মনামতি বিভাগ কুমিল্লায় স্থাপনের কথা হলেও সেটি হয়নি। একদল কুমিল্লাবাসী এটি না বুঝেই বিরোধিতা করেছিল। অথচ কুমিল্লার অতীত নাম ছিল ত্রিপুরা। কুমিল্লাকে ময়নামতি বিভাগ বলা হলে রানী ময়নামতিকে শ্রদ্ধা করা যেত। প্রয়োজনে বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার প্রধান সম্পাদক কে ছিলেন সেটি একটু কষ্ট করে দেখার অনুরোধ জানাব। কিংবা মোবাশ্বের আলী সাহেবের বাংলাদেশের সন্ধানে, যেটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করেছিলেন যা কিনা স্টুডেন্ট ওয়েজ প্রকাশ করেছে ২০১৭তে, সেটিও দেখতে পারেন। এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে বিএনপি-জামায়াত মহা খুশি। তারা জোট পাকাচ্ছে। কুমিল্লা শহর ছিল ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভরপুর। গণধিক্কৃত খন্দকার মোশতাককে বাদ দিলে কুমিল্লার মানুষ সব সময়ে মুক্ত চিন্তার অধিকারী ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে মনে হয়ে আমার চেনা শহর ক্রমশ অচেনা হয়ে পড়ছে। কুশিক্ষা ও কুসংস্কারে ভরে উঠছে। মুক্ত চিন্তার গলায় যেন কেউ অন্ধত্য ও অরণ্যের দাসত্ব চাপাতে চাচ্ছে।

সরকারী উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও বাস্তবায়নে অসামর্থ্য দেখা যাচ্ছে। শাসনগাছা এলাকাটি এখন যাতায়াতের জন্য বিভীষিকাস্বরূপ। সাযুজ্যহীন উন্নয়ন পরিকল্পনা, তলে তলে প্রতিক্রিয়াশীলদের সঙ্গে আঁতাত কুমিল্লা শহরের সার্বিক উন্নয়নকে পিছিয়ে দিচ্ছে। রাষ্ট্রের উন্নয়ন ব্যবস্থায় কুমিল্লা যেন কিছুতেই সক্ষমতার সৃষ্টি করতে পারছে না। ব্যবস্থাপনায় বলে, কোন কিছুই ৩০% এর বেশি নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে নেই। সেভাবে দেখতে গেলেও কুমিল্লা শহর যেন আজ ভুতুড়ে পরিবেশের সঞ্চার হয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত প্রায়। আসলে সরকার যে উন্নয়ন কর্মসূচী দিচ্ছে, তার সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের একটি সমন্বয় সাধন এবং খাই খাই ভাবের বদলে কিছুটা কমিউনিটি সার্ভিস এবং কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটির আওতায় কাজ করা দরকার। এ স্থানটিতে কিন্তু কাজ করবেন স্থানীয় লোকেরা। এ জন্য স্থানীয় পর্যায়ের সম্মিলিত নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। এদিকে কুমিল্লা ইপিজেডের অবস্থা কোনমতেই দেশের অন্য ইপিজেডগুলোর মতো নয়।

আবার বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় মালিকানার দ্বন্দ্বের কারণে কাজ করছে না। প্রফেসর ড. শামসুল হক স্যার কুমিল্লায় যে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন, তাদের কেউই বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্তে অনুমোদন পায়নি। বছরের পর বছর চলে গেল, কিন্তু এ বিষয়টি সমাধানে কেউ এগিয়ে এলো না। দুষ্টু লোকেরা অনেক বেশি শয়তানী কর্মকাণ্ডে পারঙ্গম। অথচ যখন অনুমোদনপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয়, তখন মূল সার্টিফিকেট ইস্যুর দায়িত্ব কার? আসলে শিক্ষকরাই যখন চরম দুর্নীতিতে ডুবে যায়, তখন তা একটি জাতির জন্য কলঙ্কের বিষয়। এদিকে বহু আগেই কুমিল্লার এয়ারপোর্টটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বেসরকারী উদ্যোগে কিংবা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় পুনরায় চালু করার ব্যাপারে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে। দ্বিতীয় দাউদকান্দি ও মেঘনা সেতু প্রকল্প বর্তমান সরকার গ্রহণ করেছে। সেদিন আলাপকালে অনেক কুমিল্লাবাসী জানালেন যে, দাউদকান্দি ও মেঘনা সেতু এবং কাঁচপুর ব্রিজ বরাবর যদি রেললাইন স্থাপন করা যেত তবে ভাল হতো। কেননা রেললাইন থাকলে কুমিল্লাবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ের লোকদেরও আর্থিক উন্নতি এবং দেশের মোট জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধিতে ন্যূনপক্ষে ১.৫% হারে যোগ হবে বলে একটি হিসাব কষে দেখেছি।

এ হিসাবের বরাত দিয়ে সরকারের কাছে অনুরোধ রাখব, কুমিল্লা থেকে ঢাকা পর্যন্ত আরেকটি নতুন রেললাইন স্থাপনের বিষয়টি পাবলিক-প্রাইভেট-ফরেন পার্টনারশিপের আওতায় আনার ব্যাপার পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য। দেশে আজ যে রেল উন্নয়নের প্রসার ঘটেছে, সেক্ষেত্রে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় দাউদকান্দি ও মেঘনা সেতু বরাবর রেল চালু করার পরিকল্পনা দরকার। কুমিল্লা বার্ডের কার্যক্রম স্তিমিত প্রায়। নতুন টেকনোলজি ট্রান্সফার, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জনসংখ্যা রোধ এবং সময়ের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকা-ে কুমিল্লা বার্ডকে নতুনভাবে ভাবতে হবে। উদ্যোক্তা শ্রেণী তৈরি করে মানুষের মধ্যে কর্মোদ্যম সৃষ্টি করতে হবে। সময়ের বিবর্তনে এনজিওগুলো নতুন নতুন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। অথচ গ্রামীণ ব্যাংক আর কুমিল্লা বারড টার মডেলই এখন প্রাচীন হয়ে গেছে।

এগুলোর মাধ্যমে দেশের উন্নয়নকে কাজে লাগাতে হলে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নতুন নির্দেশনা দেয়া দরকার, যাতে করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়। কেবল অর্থ বিতরণ ও মুনাফা অর্জন এ ব্যবস্থা নয়, বরং যাকে সাহায্য করা হচ্ছে, উপকারভোগী সে যেন সঠিকভাবে দেশ ও জাতির উন্নয়নে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে কাজ করে। সেজন্য প্রয়োজন যথাযথ টেকনোলজি ট্রান্সফার তথা ডিসরাপটিভ টেকনোলজির বাস্তবায়ন। গ্রামীণ ব্যাংক হয়ত ড. ইউনূসের অপতৎপরতার কারণেই এক সময়ে নিজে নিজে ধ্বংস হয়ে যাবে, কেননা তাদের কর্মকাণ্ডে আধুনিকতা ও বর্তমান যুগোপযোগী কোন পরিকল্পনার ছোঁয়া নেই। কিন্তু কুমিল্লা বার্ড তো যুগোপযোগী মডেলে ট্রান্সফরম করে লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে মানবকল্যাণে কাজ করতে পারে। ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে সহায়তা করতে পারে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে জননেত্রীর হাত ধরে দেশ এগিয়ে চলুক।

ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে বাঁচার জন্য সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যে সমস্ত প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয়নি, সেগুলো নতুন করে চালু করতে হবে। পিকেএসএফের সমৃদ্ধ কর্মসূচীটি কুমিল্লার বাগিচাগাঁওতে চালুর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। অনতিবিলম্বে কুমিল্লায় বিমানবন্দর চালু ও নতুনভাবে রেললাইন স্থাপনের বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা দরকার। আবার খণ্ডিত পরিকল্পনা নয়, বরং কুমিল্লার উন্নয়নের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হলে যারা তলে তলে সাম্প্রদায়িক চেতনায় পরিপুষ্ট, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। নচেত অশিক্ষা-কুশিক্ষা রাষ্ট্রের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় সুশিক্ষা প্রদানের জন্য এবং ধর্ম ব্যবসায়ীরা যাতে তাদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করতে না পারে, সেজন্য সজাগ থাকতে হবে। অনতিবিলম্বে ময়নামতি বিভাগ কুমিল্লায় চালু হওয়া বাঞ্ছনীয়। কুমিল্লার সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের না পাওয়ার বেদনাকে ধর্ম ব্যবসায়ীরা যেভাবে ব্যবহার করছে, সেটি অবিলম্বে দূর করা দরকার। কুমিল্লা শহর হয়ে উঠুক সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের উৎসভূমি। মানুষের মেধা-মননে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটুক। দেশে আজ উন্নয়নের যে জোয়ার বইছে, তার মূল স্রোতোধারায় কুমিল্লা নগরী অন্তর্ভুক্ত হোক। জনপ্রতিনিধিরা সত্যটা আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে জানান, যাতে তিনি সূর্যের আলোয় যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন, তাতে শহর ও কুমিল্লা অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

কুমিল্লা