এই বাড়ির মালিক আমি, ট্রাস্ট নয়: এরিক এরশাদ

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেলে এরিক এরশাদ বলেছেন; ট্রাস্টের কোথাও লেখা নেই আমার মা আমার সঙ্গে থাকতে পারবেন না, আর এই বাড়ির মালিক আমি, ট্রাস্ট নয়। আমার মা আমার সঙ্গেই থাকবেন।

এরশাদের বাসভবনে বিদিশার অবৈধভাবে প্রবেশের অভিযোগ তুলে শনিবার সন্ধ্যায় গুলশান থানায় একটি জিডি করেন এরশাদের ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর খালেদ। সেই জিডির প্রেক্ষিতে সোমবার প্রেসিডেন্ট পার্কে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন  তিনি।

প্রেসিডেন্ট পার্কে সাংবাদিকদের এরিক বলেন: আমিই আমার মাকে এখানে আসতে বলেছি, আমার সঙ্গে থাকতে বলেছি। আমার অনেক অসুবিধা হচ্ছিলো মাকে ছাড়া। এটা আমার বাড়ি।

সংবাদ সম্মেলনে বিদিশা এরশাদ বলেছেন: যেকোনো মূল্যে ছেলের সঙ্গেই থাকতে চাই। ছেলেকে চাই।

সম্পত্তির লোভে এখানে আসিনি উল্লেখ করে বিদিশা বলেন: সম্পত্তি দিয়ে আমি কী করবো। আমি এসেছি আমার ছেলের কাছে। আমি আমার আমার ছেলের অবিভাবক। এখানে চাচা কী?

কোথায় লেখা আছে যে আমার ছেলের দেখাশোনা ট্রাস্ট করবে? আর ট্রাস্ট ‍যদি দেখশোনাই করে তাহলে আমার ছেলেকে যখন মারধর করা হলো তখন ট্রাস্ট কোথায় ছিলো?

বিদিশা এরশাদ আরো বলেন: জি এম কাদের মনে করছেন আমি রাজনীতিতে আসতে পারি সেজন্যই তিনি এমন করছেন।

ট্রাস্টের পক্ষে করা জিডিতে বলা হয়েছে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর তার বাসভবন প্রেসিডেন্ট পার্ক যথারীতি ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। ট্রাস্টের ওই বাসায় গত ১৪ নভেম্বর সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক সম্পূর্ণ অন্যায় ও অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। ওই জমিতে বিদিশা সিদ্দিকের প্রবেশ করার আইনগত কোনও অধিকার নেই বলেও উল্লেখ করা হয় জিডিতে।

এর আগে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এরশাদের ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর খালেদ আখতার দাবি করে বলেন: প্রেসিডেন্ট পার্কে বিদিশার প্রবেশ অবৈধ। সেখানে তার থাকার কোনো অধিকার নেই। ট্রাস্টের নিয়ম অনুযায়ী এরিক এরশাদ তার মা বিদিশাকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট পার্কে অবস্থান করতে পারবেন না। এরিকের এখানে চাওয়ার কোনো এখতিয়ার নাই। এরিকের সমুদয় দায়িত্ব ট্রাস্টের। আপনারা অনুসন্ধান করে দেখেন, এটা তার নিজস্ব বক্তব্য না।

তিনি বলেন, ‘এরিকের দেখভালের দায়িত্ব ট্রাস্টের। ট্রাস্ট ডিসিশন নেবে, এখানে কে থাকবে। এরিক যদি মাকে নিয়ে থাকতে চায়, তবে অন্যখানে থাকতে পারবে, কিন্তু এখানে থাকতে পারবে না।’

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একবার অভিভাবকত্বের মামলা করে বিদিশা হেরে গেছে। এখন যদি সে মা হিসেবে আবার আইনের আশ্রয় নেয়, তাহলে আমরা দেখব আইনিভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ কী নেওয়া যায়।’

ছেলে এরিকের অভিভাবকত্ব নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন বিদিশাও। সে বিষয়ে খালেদ আখতার বলেন, ‘আমরা মনে করি, আমরা এখনও এরিকের অভিভাবক। বিদিশা এখন সাময়িক অবস্থান করছেন। সেটার তো কোনো আইনগত ভিত্তি নাই। এখন অভিভাবকত্ব নিয়ে তারা যদি আইনের দিকে যায়, আমরা মোকাবেলা করব।

২০০৫ সালে এরশাদ ও বিদিশার বিবাহ বিচ্ছেদের পর ২০০৯ সালে এরিকের অভিভাবকত্বের দাবিতে আদালতে যান বিদিশা। পরে ২০১১ সালে আসে রায়। সে রায়ে হেরে যান বিদিশা। এরিক বড় হতে থাকেন এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্কে।

এরশাদএরিকট্রাস্টবিদিশা