উন্নাও ধর্ষণ: গায়ে আগুন দেয়া ধর্ষকদের মৃত্যু চেয়ে মারা গেলেন তরুণী

ভারতের উত্তর প্রদেশে ধর্ষণ মামলার শুনানিতে যাওয়ার পথে অভিযুক্তদের আগুনে দগ্ধ তরুণী মারা গেছেন।

শুক্রবার রাতে দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সফদরজং হাসপাতালের বার্নস অ্যান্ড প্লাস্টিক বিভাগের প্রধান ডা. শালভ কুমার জানান, শুক্রবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর আধঘণ্টার মধ্যেই ওই তরুণী মারা গেছেন।

‘রাত ১১টা ১০ মিনিটে তার হার্ট অ্যাটাক হয়। আমরা তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু বাঁচাতে পারিনি। তিনি ১১টা ৪০ মিনিটে মারা যান,’ বলেন তিনি।

এনডিটিভি জানায়, উত্তর প্রদেশের উন্নাও জেলার ওই নারী চলতি বছরের মার্চে তার গ্রামের দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন। শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার আদালতে যাওয়ার পথে তার গায়ে আগুন দেয় মামলার অভিযুক্ত ওই দুই ব্যক্তি ও তাদের বাবাসহ ৫ জন।

২৩ বছর বয়সী ওই তরুণীর শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল। গুরুতর আহত অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে উড়োজাহাজে করে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আগুন লাগার পর থেকে হাসপাতালে নেয়া পর্যন্ত পুরোটা সময় চেতনা ছিল তার।

মৃত্যুর আগে দেয়া জবানবন্দিতে দগ্ধ তরুণী তার গায়ে যারা আগুন দিয়েছে তাদের নাম জানান এবং বলেন, আগুন লাগানোর আগে তাকে আছড়ানো ও মারধর করা হয়েছিল এবং ছুরিকাঘাতও করা হয়েছিল।

ধর্ষণ মামলার দুই আসামির একজন শিবম ত্রিবেদী আগুন লাগানোর ঘটনার ৫ দিন আগেই জামিনে মুক্ত হয়ে বের হয়েছিল। আরেক ধর্ষক শুভম ত্রিবেদী পলাতক ছিল। কিন্তু আগুন লাগানোর সময় দু’জনই উপস্থিত ছিল।

পুলিশ বৃহস্পতিবার ৫ জনকেই গ্রেপ্তার করে।

আসামিদের মেরে ফেলা হোক: নিহতের স্বজনরা
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের প্রাণদণ্ড চেয়েছেন নিহতের স্বজনরা। নিহতের বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সরকার ও কর্তৃপক্ষের কাছে শুধু এটুকুই চাই, হয় তাদেরকে ফাঁসিতে ঝোলানো হোক, অথবা গুলি করে মারা হোক, যেমনটা হায়দরাবাদে ঘটেছে। আমি লোভী নই। আমাকে ঘরবাড়ি বানিয়ে দিতে হবে না। আমি আর কিছুই চাই না।’

তরুণীর ভাইও একই কথা বলেন, ‘আমার বোন বলেছিল: ‘আমাকে বাঁচাও, আমি তাদের মৃত্যু দেখতে চাই।’ আমি বলেছিলাম আমরা তোমাকে বাঁচাবো। কিন্তু পারিনি। আমার বোনটা বেঁচে নেই, এবং আমি চাই না ওই পাঁচজন বেঁচে থাকুক। এটাই আমার একমাত্র ইচ্ছা।’

যোগী আদিত্যনাথ

উন্নাওয়ের এই ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডকে ‘দুঃখজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মামলাটি দ্রুত বিচার আদালতে নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ধর্ষণহায়দরাবাদ