আস্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে খেলা বন্ধ থাকল ৮ মিনিট। আর ‘অনাকাঙ্খিত’ বিরতির পর ছন্দ হারাল বাংলাদেশ। বিরতির আগে এবং পরের ব্যাটিংয়ে দেখা দিল দৃশ্যমান বৈপরীত্য।
১৯০ রান তাড়া করতে নামা বাংলাদেশ ওশান টমাসের করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ ডেলিভারিটি বিস্ময়করভাবে ‘নো’ ডেকে বসেন আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, টমাসের সামনের পা দাগের অনেকটা পেছনে ছিল। আম্পায়ারের ‘মহাভুল’ মেনে নিতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রিভিউ চেয়ে আবেদন জানাতেই পড়ে যায় লম্বা বিরতি।
তিনটি ছক্কা ও এক চার আসা ওভারটির পরই ছন্দ হারায় বাংলাদেশ। ৪.১ ওভারে এক উইকেটে ৬৫ রান তোলা দলটিই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় ১৪০ রানে।
উড়ন্ত সূচণা পেয়েও কাজে লাগাতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়েন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। তাদের সান্ত্বনা দিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন হেড কোচ স্টিভ রোডস। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও তিনি জানান, বিরতিটাই কক্ষচ্যুত করেছে বাংলাদেশকে।
‘উইন্ডিজ দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিল, মোমেন্টাম তাদের পক্ষে ছিল। এরপর আমরাও দারুনভাবে ম্যাচে ফিরে আসি। আমাদের ইনিংস শুরুর সময় মোমেন্টাম আমাদের পক্ষে ছিল। এরপর ম্যাচের মাঝে খেলা বন্ধ হওয়ায় মোমেন্টাম ওদের পক্ষে চলে যায়।’
‘আমি আমাদের খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে শান্ত রাখার চেষ্টায় ছিলাম। চেষ্টা করেছি মাঠে বার্তা পাঠাতে, বলতে চেয়েছি, ‘দেখ আমরা এখন ভালো অবস্থানে আছি। তোমরা সতর্ক থাক এবং যখন খেলা শুরু হবে তখন মনোযোগ ধরে রেখ।’ কারণ এমন অবস্থায় ম্যাচের মোড় ঘুরে যেতে পারে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বার্তা দেয়ার পরও সেটা কাজে আসেনি, কারণ এমন অবস্থায় সবসময় মাথা ঠাণ্ডা রাখা কঠিন। এটাই আমাদের হয়েছে, আমরা ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারিয়েছি।’-বলেন টাইগারদের ইংলিশ কোচ।
আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্ত বিপক্ষে যাওয়ার পর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন উইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্র্র্যাথওয়েট। ফিল্ড আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। গোটা দল একত্রিত হয়ে সভা করে। সীমানার বাইরে রিজার্ভ আম্পায়ারের সঙ্গেও কথা বলেন ব্র্যাথওয়েট।
কাচঘেরা কক্ষ থেকে আসেন ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো। ড্রেসিংরুম থেকে বাইরে আসেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। পরে সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। মেনে নিয়ে ফিল্ডিং সাজিয়ে খেলায় মন দেয় উইন্ডিজ। এরপরই একের পর এক ছোবলে বিধ্বস্ত করে টাইগারদের ব্যাটিংলাইন।
ম্যাচশেষে হার-জিতের প্রসঙ্গ ছাপিয়ে বড় হয়ে এল চতুর্থ ওভারের ঘটনাটাই। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট বিস্তারিত বললেন আম্পায়ারের ভুলের পর তুলকালাম নিয়ে। ওয়ানডে সিরিজের আম্পায়ারিং নিয়েও যে অখুশি ছিলেন সেটিও বলে গেলেন তিনি।
‘আমি ম্যাচ রেফারির কাছে গিয়েছিলাম, দ্বিতীয় ম্যাচের পর। আমি বলেছিলাম ওয়ানডে সিরিজ থেকেই প্রতিটি ফিফটি ফিফটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের পক্ষে যাচ্ছিল। আমি কখনই প্রতারণার জন্য কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি না। আমি মনে করি তাদের অভিপ্রায় পক্ষপাতমূলক কিংবা প্রতারণা করার মতন, তবে আমি প্রতারণার অভিযোগ তুলছি না। আমি শুধু আমার কথা জানাতে চেয়েছি ম্যাচ রেফারিকে। কারণ আমি ওয়ানডে সিরিজ থেকে দলের সাথে আছি, প্রতিটি ফিফটি ফিফটি সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে গেছে। ঐতিহ্যগতভাবে আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে চেয়েছি।’