সাদা জার্সির পেছনে বসেছে খেলোয়াড়দের নাম। বড় করে লেখা জার্সি নম্বর। সামনে দল ও প্রধান পৃষ্ঠপোষকের নাম। কনুইয়ের ওপরের অংশে আরেকটি পৃষ্ঠপোষক কোম্পানির লোগো। মনে হতে পারে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের হাওয়ায় বদলে গেছে বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট! তবে অনেক নতুনত্ব থাকলেও পেশাদার মনোভাবের ব্যাপারটি কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ হল জাতীয় ক্রিকেট লিগ মাঠে গড়ানোর আগেই। ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে চার দলের অধিনায়কের আসার কথা থাকলেও ছিলেন কেবল মুমিনুল হক ও মার্শাল আইয়ুব।
জাতীয় ক্রিকেট লিগে অংশগ্রহণকারী দল আটটি। বৃহস্পতিবার দেশের চার ভেন্যুতে ব্যাট-বলের লড়াইয়ে নামবেন তারা। ঢাকায় প্রথম রাউন্ডের দুটি ম্যাচ, খুলনা ও রাজশাহীতে একটি করে ম্যাচ। যাদের ম্যাচ ঢাকায় পড়েছে সেই চার দলের অধিনায়কের বুধবার বিকাল তিনটায় শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে থাকার কথা ছিল। কিন্তু পাওয়া গেল শুধু মিরপুরের ম্যাচের দুই অধিনায়ক, চট্টগ্রাম বিভাগের মুমিনুল হক ও ঢাকা মেট্রোর মার্শাল আইয়ুবকে।
জাতীয় লিগে আট দল অংশ নেয় দুটি স্তরে। মুমিনুল ও মার্শালের দল খেলবে দ্বিতীয় স্তরে। যে কারণে এবছর তাদের শিরোপা জয়ের কোনো সুযোগই নেই। অথচ তারাই ট্রফি হাতে দাঁড়ালেন ক্যামেরার সামনে। এক সাংবাদিক তো মজা করে মুমিনুলকে বলেই বসলেন, ট্রফিটা জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই! মুমিনুলও মজা করে দিলেন উত্তর, কে বলে নেই। আগামীবার তো আছে! এবার যদি ভালো খেলে প্রথম স্তরে যেতে পারি!’
টুর্নামেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয় ফতুল্লায় যাদের ম্যাচ সেই দুই দল ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অধিনায়কের আসতে অন্তত ৩০ মিনিট দেরি হবে। পরে মুমিনুল ও মার্শালই ডায়াসে থাকা ট্রফি হাতে দাঁড়ান ক্যামেরার সামনে। মুখোমুখি হন সংবাদমাধ্যমের। আনুষ্ঠানিকতার শেষভাগে আসেন ঢাকা বিভাগের অধিনায়ক নাদিফ চৌধুরী। কথা বলেন মিডিয়ার সঙ্গে। জাতীয় লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রাজশাহীর অধিনায়ক জহুরুল হক অমি বিকাল পৌঁনে চারটায় যখন স্টেডিয়ামে পৌঁছান, ততক্ষণে ভেঙে যায় মঞ্চ। মাঠ ছাড়েন সাংবাদিকরা।
চার অধিনায়ককে এক করে আয়োজকদের ফটোসেশনের ইচ্ছা থাকলেও সেটি সম্ভব হয়নি খেলোয়াড়দের বিলম্বে। সকাল থেকে মাঠে থাকা মুমিনুল, মার্শালদেরও তাড়া ছিল টিম হোটেলে ফেরার।
কেনো চার অধিনায়ককে এক করা গেল না এই প্রশ্নে টুর্নামেন্ট কমিটির ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘জহুরুল আজই ‘এ’ দলের সিরিজ খেলে শ্রীলঙ্কা থেকে ঢাকায় ফিরেছে। কাল তাদের ম্যাচ ফতুল্লায়। সে ফতুল্লায় চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে আসতে দেরি হয়ে গেছে। পৌঁনে চারটায় সে স্টেডিয়ামে পৌঁছেছিল। কিন্ত তার আগেই আপনারা চলে গেছেন।’
ক্রিকেট বোর্ড, নির্বাচক, খেলোয়াড়, কোচ, সংগঠক, পৃষ্ঠপোষক- সব মহল থেকেই আশা করা হচ্ছে এবারের জাতীয় লিগ হবে তীব্র প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ। খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়ে বিসিবির কড়াকড়ি সে সম্ভাবনার পালে যুগিয়েছে হাওয়া। তবে খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি, সুযোগ-সুবিধা বিন্দুমাত্র না বাড়িয়ে পিকনিক ক্রিকেটের তকমা আদৌ দূর করা কতটা সম্ভব, সে প্রশ্ন থেকেই যায়!