নতুন করে বাংলাদেশ দলের কোচ হয়ে এসেছেন চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে। খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলাপ সেরেছেন আগেই। বুধবার সংবাদমাধ্যমের নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন। সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে অনেকের সঙ্গে হাত মেলালেন। হাই-হ্যালো পর্বে মুখে হাসি লেগেছিল কোচের।
ঠিক দুপুর আড়াইটায় হাথুরু আসেন সম্মেলন কক্ষে। নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সাংবাদিকদের অপেক্ষার চিত্র বলে দিচ্ছিল নতুন করে ফেরা পুরনো হেড কোচের গুরুত্ব। সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি উত্তর দিয়েছেন বুঝে-শুনে, অল্প কথায়। তবে শেষের একটি প্রশ্নে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
বয়সটাই শুধু যা একটু বেড়েছে হাথুরুসিংহে আছেন আগের মতোই। কথাবার্তা, আচরণে দুই সময়ের মধ্যে পার্থক্য করা করা গেল না মোটেও।
বাংলাদেশে ফিরতে পেরে খুশির ঝিলিকও ফুটে উঠল চেহারায়। হাথুরু এমন একজন কোচ যার কাছে সবার আগে দল। অতীতে দেখা গেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসানকেও ছেড়ে কথা বলেননি। যখন যেখানে পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়েছে সরাসরিই বলেছেন, বোর্ডের মাধ্যমে আদায়ও করে নিয়েছেন। এমন একজন কড়া কোচকেই চাইছিল বিসিবি।
সবকিছু মিলে যাওয়ায় আবার তাকে ২ বছরের জন্য তিন ফরম্যাটে হেড কোচের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এবছর অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ মিশন। সেখানে বড় সাফল্যের ছক কষছে বাংলাদেশ। হাথুরুর কোচিংয়েই ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সাফল্য পেয়েছিল টাইগাররা। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা, ২০১৭তে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে বাংলাদেশ খেলেছিল তার অধীনেই। আর দায়িত্ব নিয়েই একের পর এক দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয়ের সুখস্মৃতি তো আছেই।
বিসিবি হাথুরুকে রাখতে চাইলেও কোচ নিজেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন নিজ দেশ শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব নিতে। পরে ফিরে যান অস্ট্রেলিয়ায় নিউ সাউথ ওয়েলসের কোচিংয়ে।
২০১৪ সালের শেষদিকে বাংলাদেশ দিয়েই আন্তর্জাতিক দলের কোচিং শুরু হাথুরুর। আবার সেখানে ফিরতে পেরে খুশি এই লঙ্কান, ‘বাংলাদেশের প্রতি সবসময়ই টান অনুভব করি। আমার কোচিং (আন্তর্জাতিক) এখান থেকেই শুরু হয়েছিল। ফিরতে পেরে ভালো লাগছে।’
হাথুরুর বয়স বেড়েছে। এখন আরও অভিজ্ঞ কোচ। তবে ক্রিকেটের মৌলিক দিক নিয়ে তার ভাবনা আগের মতোই। বাংলাদেশ দল ঘরের মাঠের সুবিধা পুরোপুরি নিতে শিখেছে হাথুরুসিংহের কোচিংয়েই। আগের মেয়াদে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে টেস্টে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্রুত সফল হওয়ার একটা পন্থা বের করে ফেলেছিলেন স্পিনিং উইকেটে বিদেশি দলের বিপক্ষে খেলে।
এবারের মেয়াদে কী এই ভাবনা থেকে সরে আসবেন হাথুরু? প্রশ্নটি ভিত্তিহীন মনে হয়েছে তার কাছে। তাইতো জবাব দিতে গিয়ে খানিকটা মেজাজও হারালেন।
‘ঘরের মাঠের সুবিধা বলে কি বোঝায়? যখন আমরা নিউজিল্যান্ড যাই, কী ধরনের উইকেটে খেলি? ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া কী করে তাদের ঘরের মাঠে? ভারত এখন ঘরের মাঠে কী করছে?’
‘দেশের বাইরে গেলে আমাদের যা আছে, তা দিয়েই ম্যানেজ করতে হবে। যদি মিসাইল না থাকে তাহলে তুমি কীভাবে লড়াই করবে। আমাদের তো গেরিলা যুদ্ধ করতে হবে, তাই না? ওদের আমাদের ঘরে আসতে দাও, আমরা ছোট্ট ছোট্ট অস্ত্র দিয়ে লড়ব। যদি আমাদের অস্ত্র না থাকে তাহলে তো আমরা কিছু করতে পারব না। আমরা শুধু খেলোয়াড়দের গড়ে তুলতে পারি।’