আইপিএলের দামি উনাদকাট ও বরুণ

বিদেশিদের মধ্য সবচেয়ে বেশি দাম পেয়েছেন ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার স্যাম কারেন

আইপিএলের নিলাম বড়োই বিস্ময়কর। এখানে ভারতের বহু যুদ্ধের নায়ক, বিশ্বকাপের হিরোকে দল পাওয়ার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আবার বেস প্রাইজের চেয়ে ৪২ গুণ দামে ইতিহাসের খাতায় ঢুকে পড়েন অনামী কেউ। আইপিএল নিলামে এটাই মজা। হাতুড়ির এক ঘায়েই ভাগ্য বদলে যায়। যেমনটা বদলে গেছে জয়দেব উনাদকাট ও বরুণ চক্রবর্তীর। এবারের নিলামে যৌথভাবে সর্বোচ্চ হাঁকিয়েছেন তারা। বিদেশিদের মধ্য সবচেয়ে বেশি দাম পেয়েছেন ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার স্যাম কারেন।

দল পাননি বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিম। কোনো দলই তাকে কেনার আগ্রহ দেখায়নি। মুশফিকের নাম উঠলেও নিলামে নাম ওঠেনি আরেক বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের।

ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।

এবারের নিলামের তালিকায় শুধু এই দুই বাংলাদেশি ক্রিকেটার রয়েছেন। অবশ্য প্রথমে ১০ জন বাংলাদেশি খেলোয়াড়ের নিলামের তালিকায় থাকার কথা ছিল। অলরাউন্ডার ক্যাটাগরিতে থাকা মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক দুজনের ভিত্তিমূল্যই ৫০ লাখ রুপি।

যুবরাজ যে দল পাবেন না সেটা আশঙ্কা করা হচ্ছিল। গত আইপিএলে ভালো কিছু করতে পারেননি তিনি। বয়সও হয়েছে ৩৭। এই পরিস্থিতিতে প্রথমে বেস প্রাইজ ১ কোটি রুপিতেও যুবরাজকে কেউ কিনতে রাজি হননি। তবে নিলাম শেষ হওয়ার আগে যখন অবিক্রীত ক্রিকেটারদের নাম আবার ওঠে তখন বেস প্রাইজেই তাকে তুলে নেয় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।

অন্যদিকে নিলামে চমক দেন তামিলনাড়ুর অনামী ক্রিকেটার বরুণ চক্রবর্তী। এ বছর তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে বেশ নাম করেছিলেন লেগস্পিনার বরুণ। উইকেট নেয়ার পাশাপাশি রান দেয়ার ব্যাপারেও কৃপণ ছিলেন তিনি। ৪০ ওভার বল করে মাত্র ৪.৭ প্রতি ওভারে রান দিয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে ১২৫টা বলে কোনো রানই করতে পারেননি বিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা। এমন বরুণকে ৮ কোটি ৪০ লাখ রুপিতে নিজেদের দলে নেয় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। তাকে নেয়ার জন্য পাঞ্জাব ছাড়াও, কেকেআর এবং দিল্লির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়।

শেষ মৌসুমে ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১.৫ কোটি রুপি দাম পেয়েছিলেন উনাদকাট। প্রতাশ্যা মতো অবশ্য ফল দিতে পারেননি। ১৫ ম্যাচে পেয়েছিলেন মাত্র ১১ উইকেট।রাজস্থানের হয়ে সাফল্য না পাওয়ায় আইপিএল শেষে উনাদকাটকে ফ্র্যাঞ্চাইজি তাকে ছেঁটে ফেলে। রিলিজ করে দেয় বাঁ-হাতি পেসারকে। তবে রাজস্থানের গোলাপি শহরের নিলামে আবার রাজস্থানেই ফিরলেন উনাদকাট।

উনাদকটকে রিটেন করলে স্বভাবতই শেষবারের অর্থমূল্যের চেয়ে আরও বেশিই অর্থ খরচ করতে হত। নিলামের আগে উনাদকাটকে ফিরিয়ে দেয়ায় রাজস্থানকে সেই পথে হাঁটতে হয়নি। আগের মূল্যের চেয়ে বেশ কিছুটা কম মূল্যেই তাকে দলে টানে রাজস্থান। শুরুতে দিল্লি, চেন্নাই, পাঞ্জাবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টক্কর চললেও শেষ পর্যন্ত ৮.৪ কোটি রুপি খরচ করে উনাদকাটকে দলে নেয় ‘ডবল আর’।

বিদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার স্যাম কারেন। তার বেস প্রাইস ছিল ২ কোটি রুপি। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব তাকে ৭.২০ কোটি রুপিতে দলে টানে।

উনাদকাট ও বরুণ ছাড়া ইশান্ত শর্মাকে দিল্লি ১ কোটি ১০ লাখ রুপিতে এবং মোহাম্মদ শামিকে ৪ কোটি ৮০ লাখ রুপিতে দলে নিয়েছে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। মোহিত শর্মার ভিত্তিমূল্য ছিল ৫০ লাখ রুপি, তবে চেন্নাই সুপার কিংস তাকে দলে নিয়েছে ৫ কোটি রুপিতে। আইপিএলে সাড়া ফেলা অক্ষর প্যাটেলকে দিল্লী ৫ কোটি রুপিতে দলে নিয়েছে। একই মূল্যে কার্লোস ব্রাফেটকে দলে নিয়েছে কোলকাতা নাইট রাইডার্স।

তরুণ ক্রিকেটাররা সাড়া ফেললেও অবিক্রীত থেকে গেছেন ক্রিস ওকস, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, মার্টিন গাপটিল এবং অ্যালেক্স হেলসের মতো প্রতিষ্ঠিত ও মারকুটে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা।

এ ছাড়া জনি বেয়ারস্টোকে ২ কোটি ২০ লাখা রুপিতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, নিকোলাস পুরানকে ৪ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব, ঋদ্ধিমান সাহাকে ১ কোটি ২০ লাখ রুপিতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, লাসিথ মালিঙ্গাকে ২ কোটি রুপিতে দলে নিয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। ২০ লাখ রুপির ভিত্তিমূল্যের তরুণ স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীকে ৮ কোটি ৪০ লাখ রুপিতে দলে নিয়েছে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।

আইপিএল-২০১৯লিড স্পোর্টস