অপহৃত ভারতীয় হাইকমিশন কর্মীদের মারধর, পান করানো হয় নোংরা পানি

ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের দুই কর্মীকে অপহরণ করা হয়েছিল। তাদের রড বা কাঠ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। নোংরা পানি পান করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস।

সোমবার সকাল থেকে ওই দুই হাইকমিশন কর্মীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানের তরফে গা-ছাড়া মনোভাব দেখানো হয়। ইতিমধ্যে ডেকে পাঠানো হয় দিল্লিতে পাকিস্তানের দূতাবাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ হায়দার শাহকে। নয়াদিল্লি সাফ জানিয়ে দেয়, পাকিস্তানে ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মীদের নিরাপত্তার যাবতীয় দায়িত্ব ইমরান খান প্রশাসনের।

শেষপর্যন্ত ভারতের চাপের মুখে সাত ঘণ্টা টানাপোড়েনের পর দুই কর্মীকে ভারতীয় হাইকমিশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাদের শরীরে ক্ষত ধরা পড়ে। গলা, মুখ-সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের মারাত্মক আঘাত লেগেছে।

হিন্দুস্থান টাইমস তাদের প্রতিবেদনে সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, সোমবার ৮ টা ৩০ মিনিট থেকে ৮ টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে হাইকমিশনের কাছের একটি পেট্রল পাম্প থেকে দুই কর্মীকে তুলে নিয়ে যায় ১৫-১৬ জনের একটি সশস্ত্র দল। তারা ৫-৬ টি গাড়িতে করে এসেছিল। হাইকমিশনের কর্মীদের চোখ বেঁধে তাদের হাতকড়া পরানো হয়। মাথার উপর ছুড়ে দেওয়া হয় রুকস্যাক। সেখান থেকে তাদের মিনিট দশেক দূরত্বের একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুর দুটোর পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলে। সেই সময় তাদের রড বা কাঠ জাতীয় কিছু দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। নোংরা পানি পান করতেও বাধ্য করা হয়। সূত্রের খবর, দুই কর্মীর কাছ থেকে হাইকমিশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সব কর্মীদের বিষয়ে খুঁটিনাটি জানা যায়।

খবরে আরও প্রকাশ, হাইমকমিশনের ওই দুই কর্মী দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে তাদের স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়। সেই ‘স্বীকারোক্তি’-র ভিডিও করে রাখে অপরহণকারীরা। বৈঠকের জন্য গাড়ির পিছনে লুকিয়ে লোকজনকে হাইকমিশনে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতীয় গোয়েন্দা কর্তারা বাধ্য করতেন বলেও দুই কর্মীকে দিয়ে জোর করে বলানো হয়। সঙ্গে চলতে থাকে হুমকি। ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের অন্যান্য কর্মী এবং আধিকারিকদেরও একইরকমভাবে অত্যাচার করার হুমকি দেওয়া হয়। পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের টিটেনাস দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

শেষপর্যন্ত রাত ন’টা নাগাদ দুই কর্মীকে ভারতীয় হাইকমিশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দুই কর্মী হাঁটতে পারলেও তাদের মারাত্মক চোট লেগেছে। তবে জীবনের ঝুঁকি রয়েছে, এমন কোনও আঘাত পাওয়া যায়নি।