অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদের জন্য মানববন্ধন ও মৌন মিছিল

ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক অভিযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন, মৌন মিছিল এবং জনসমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সর্বস্তরের জনসাধারণ।

১ মে তারা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সমবেত হয়ে মৌন মিছিল নিয়ে চেরাগির মোড়ে যায় এবং সেখানে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে।

চট্টগ্রামের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা এতে অংশ নেয়।

সমাবেশে মাসুদ মাহমুদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। তাছাড়া শ্রেণীকক্ষে অপ্রাসঙ্গিকভাবে যৌনতা বিষয়ক আলোচনা করার অভিযোগকে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র অভিহিত করে এর নেপথ্যের হোতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাইনুল হাসান চৌধুরী বলেন, চার দশক ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যন্ত সুনামের সাথে শিক্ষাদান করা অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অবিশ্বাস্য ও দুরভিসন্ধিমূলক।

সাহিত্যের শ্রেণিকক্ষে যৌনতা বিষয়ক আলোচনা প্রাসঙ্গিক বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তার সাথে একমত প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মহীবুল আজীজ বলেন, অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদ একজন আপাদমস্তক জ্ঞানতাপস এবং অনুকরণীয় শিক্ষাগুরু। তার অসম্মান সমস্ত শিক্ষকদের অসম্মানের সমতূল্য বলে তিনি একে প্রতিহত করার আহ্বান জানান।

সমাবেশ থেকে অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংবাদপত্রে এবং কিছু অনলাইন নিউজপোর্টালে চরিত্রহননমূলক সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজের মতামতও তুলে ধরেছেন মাসুদ মাহমুদ। ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন: ‘‘আমার কোনো মিডিয়া নেই, সংবাদপত্র নেই। তাই ফেসবুকের মাধ্যমেই আমি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ছেলেমেয়েদের কয়েকটি কথা বলতে চাই।

তোমরা আমার সন্তান। যে অভিযোগ তোমরা করেছ তা আমার জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক হলেও তোমাদের প্রতি আমার একবিন্দুও ক্ষোভ নেই। আমি জানি তোমরা একটা ষড়যন্ত্রের অংশ হয়ে পড়েছ। তোমাদের গুটি হিসেবে ব্যবহার করে কেউ কেউ তাদের স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছে। কিন্তু যতো যা-ই হোক না কেন তোমরা একটা ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারো—আমি আজও তোমাদের শিক্ষক এবং আমার দ্বারা অন্তত তোমাদের কোনো ক্ষতি হবে না। বরং কেউ তোমাদের ক্ষতি করতে গেলে আমিই সবার আগে বুক পেতে দেব।’’

তিনি বলেন: ‘‘তবে পরিস্থিতি আমার জন্য এতটাই অবমাননাকর হয়ে দাঁড়িয়েছে যে আমি তোমাদের আর পাঠদানে অপারগতা প্রকাশ করছি। তোমাদের শিক্ষা ও ফলাফল সম্পর্কিত কোন কিছুতেই আমি আর সম্পর্কিত থাকতে পারি না অন্তত নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার আগে পর্যন্ত। আমার বিবেক সায় দেয় না।

আমি তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং শিক্ষা ও ব্যক্তিগত জীবনে সমৃদ্ধি কামনা করি।’’

চট্টগ্রাম