ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে বিএনপি।
এক শোকবার্তায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের শিক্ষাবিদ ড. এমাজউদ্দিন আহমদকে একজন খ্যাতিমান পণ্ডিত হিসেবে উল্লেখ করে বলেন: ড. এমাজউদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে দেশ একজন বরেণ্য শিক্ষককে হারালো। কীর্তিমান ও পণ্ডিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছিলেন। গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতার প্রশ্নে তার সুচিন্তিত ও বিশ্লেষণধর্মী লেখা মানুষকে চিরদিন অনুপ্রাণিত করবে।
তিনি বলেন: মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য তাকে রাষ্ট্রশক্তির জুলুমও সইতে হয়েছে। বর্তমানে রাজনৈতিক সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের দাবির পক্ষে তিনি জাতীয় অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের এই ক্রান্তিকালে তার মতো একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদের বেঁচে থাকা ছিল অতীব জরুরী। রাষ্ট্র্র-সমাজে গণতন্ত্রের বিকাশের অপরিহার্যতা ছিল ড. এমাজউদ্দিন আহমদের চিন্তা, গবেষণা ও মননের অনুষঙ্গ। তার মৃত্যুতে শোকাহত পরিবারবর্গ ও অসংখ্য গুণগ্রাহীদের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আমি মরহুম ড. এমাজউদ্দিন আহমদ এর রুহের মাগফিরাত কামনা এবং পরিবারের সদস্যবর্গ ও শুভাকাঙ্খীদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে জান্নাত নসীব করুন-এই দোয়া করি।
এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাষ্টবিজ্ঞানী ড. এমাজউদ্দীন আহমদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা এবং শোকার্ত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে সকাল ১১টায় মরহুমে কাঁটাবনের বাসায় যান।
দুই দফায় মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বাদ জুম’আ বাজমে কাদেরিয়া জামে মসজিদ ও বাদ আছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।।
অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ১৯৩২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অধিভুক্ত মালদা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১ নভেম্বর ১৯৯২ থেকে ৩১ আগস্ট ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান এবং সৃজনশীল লেখার জন্যে তিনি দেশ ও বিদেশে বিশেষভাবে সম্মানিত হয়েছেন। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৯২ সালে একুশে পদক, মাইকেল মধুসুদন দত্ত গোল্ড মডেল, শেরে বাংলা স্মৃতি স্বর্ণপদক, ঢাকা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ যুব ফ্রন্ট গোল্ড মেডেল, রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়ন ফোরাম স্বর্ণপদকসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বহু পুরস্কার-সম্মাননা অর্জন করেন। শিক্ষা জীবনে ১৯৭০ সালের মাঝামাঝি তিনি কানাডা সরকারের স্কলারশিপ পেয়ে কানাডার অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে ৫ সন্তানের জনক ছিলেন ড. এমাজউদ্দিন আহমদ।