প্রণোদনা তহবিলের ঋণে সরকার ভর্তুকি হিসেবে গ্রাহকের পক্ষে যে সাড়ে ৪ শতাংশ সুদ পরিশোধ করছে, কিছু ব্যাংক সেই সুদও গ্রাহকের ওপর চাপাচ্ছে। সুদসহ পুরো টাকা পরিশোধের জন্য গ্রাহকদের সময় বেঁধে দিচ্ছে। এ কারণে ভর্তুকি সুদকে আলাদা হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপন জারি করে এই নির্দেশনা দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলায় গত বছরের ১২ এপ্রিল আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল সরকার। এই প্রণোদনা ঋণে গ্রাহক অর্ধেক সুদ আর সরকার ভর্তুকি হিসেবে অর্ধেক সুদ বহন করার কথা।
ঘোষিত ওই আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকরী মূলধন হিসেবে ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা জারি করেছিল তখন।
ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, এই প্যাকেজের আওতায় বিতরণকৃত ঋণের উপর আরোপিত সুদের অর্ধেক বা ৪ দশমিক ৫ শতাংশ গ্রাহক পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট অংশ বা ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে ভর্তুকি হিসেবে পরিশোধ করবে।
কিন্তু সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কিছু ব্যাংক ওই প্যাকেজ থেকে বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে নির্ধারিত সমুদয় সুদ গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করছে। অর্থাৎ সরকারের দেয়া ভর্তুকি সুদও গ্রাহকের উপর চাপাচ্ছে। যার ফলে গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এই কারণে আজ বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দিয়েছে, ঐ ঋণের বিপরীতে শুধু সুদ আরোপের ক্ষেত্রে ঋণের উপর আরোপযোগ্য নির্ধারিত সুদ শুধুমাত্র গ্রাহক কর্তৃক পরিশোধকৃত অংশ (সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ) গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করা যাবে। অবশিষ্ট অংশ আলাদা হিসাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
ব্যাংক পর্যায়ে অভিন্ন হিসাবায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং অতিরিক্ত সুদ আরোপের ফলে গ্রাহক যাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেই জন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।
তবে নির্দেশনা অনুযায়ী ঋণ গ্রহীতা যথাসময়ে সুদ পরিশোধ না করলে ব্যাংক সমুদয় সুদ গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করতে পারবে এবং তা গ্রাহকের দায় হিসেবে বিবেচিত হবে বলে ঐ নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন