সায়টিকা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের বিভিন্ন ভুল ধারণা রয়েছে। তাদের ধারণা শরীরের যে কোনো জায়গায় ব্যথা মানেই তা সায়টিকার কারণে হয়। কিন্তু এটা সঠিক নয়।
সায়টিকা আসলে কি?
আমাদের শরীরে সায়টিক নামের একটি নার্ভ বা স্নায়ু রয়েছে যার অবস্থান মেরুদণ্ডের লম্বা স্পাইনের শেষ দিকে কশেরুকা বা ভাটিব্রারা এল ৩, ৪, ৫ এবং সেকরাল স্পাইনের এস ১ কশেরুকা বা ভাটিব্রারা থেকে উরুর পিছন থেকে হাটুর নিচের মাংসপেশীর মধ্যে দিয়ে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত।
যখন কোনো কারণে এই নার্ভ বা স্নায়ুর উপর চাপ পড়ে তখন তা স্নায়ুর ডিষ্ট্রিবিউশন অনুযায়ী ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে যায়। একে মেডিকেলের পরিভাষায় সায়টিকা বলা হয়।
সায়টিকার লক্ষণ:
কোমর ব্যথা; এ ধরণের ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে যায়। অনেকক্ষেত্রে কোমরে ব্যথা না থাকলেও উরুর পিছন থেকে শুরু করে হাটুর নিচের মাংসপেশীর মধ্যে বেশী ব্যথা হয়। এ অবস্থায় বিশ্রামে থাকলে বা শুয়ে থাকলে ব্যথা হয়। কিন্তু বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা হাটলে ব্যথা বেড়ে যায়।
এমনকি কিছুক্ষণ হাটলে আর হাটার ক্ষমতাও থাকে না। কিছুটা বিশ্রাম নিলে আবার একটু হাটতে পারে। আক্রান্ত পা ঝিন ঝিন বা অবশের মতো অনূভূত হয়। কখনো আক্রান্ত পায়ে জ্বালাপোড়াও অনুভব করে।
এই রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে রোগীর ইতিহাস ও ক্লিনিক্যাল এক্সামিনেশন এর পাশাপাশি লাম্বো-সেকরাল স্পাইনের এম আর আই (ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং) করার প্রয়োজন পড়ে।
এর চিকিৎসা হলো ওষুধের পাশাপাশি সম্পূর্ণ বিশ্রাম অর্থাৎ হাটাচলা বা মুভমেন্ট না করা। এমন অবস্থায় সঠিক ফিজিওথেরাপি প্রয়োজন। এক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী ২-৪ সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি হাসপাতালে ভর্তি থেকে দিনে ২-৩ বার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিলে এবং চিকিৎসক নির্দেশিত থেরাপিউটিক ব্যায়াম করলে রোগী দ্রুত আরগ্য লাভ করে।
সুস্থ হওয়ার পর কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন; সামনের দিকে ঝুকে ভারী কাজ না করা; ভারী ওজনের না তোলা, শক্ত বিছানায় শোয়া, ভ্রমণ ও হাটাচলার সময় লাম্বার করসেট ব্যবহার করা এবং চিকিৎসকের নির্দেশিত ব্যায়াম করা।
বিজ্ঞাপন