বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিক ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও হয়রানির ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকরা। পাশাপাশি সাংবাদিকরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিও জানান।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে পাদদেশে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে সাংবাদিকরা এসব দাবি জানান।
‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ’ ব্যানারে মানববন্ধনে প্রায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল বাম ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকেও সংহতি জানানো হয়।
মানববন্ধনে ইংরেজী দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীন সাংবাদিকতার কন্ঠরোধে প্রশাসন থেকে যতই চেষ্টা চালান, কালো আইন প্রণয়ন করেন আমরা সেটি মানবো না। আমরা কলম দিয়ে লেখি, কলম দিয়ে প্রতিবাদ জানাই। প্রয়োজনে জনগণ, রাষ্ট্রের স্বার্থে রাস্তায়ও নামতে জানি।
তিনি বলেন, ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে যে নির্যাতন করা হয়েছে এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিঃস্বার্থ ক্ষমা চাইতে হবে। বহিষ্কারের সাথে জড়িত সকলকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
দৈনিক বাংলাদেশের খবর ও আরটিভি অনলাইনের জাবি প্রতিনিধি শাহীনুর রহমান শাহীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর সাথে উপাচার্যের এরকম বিমাতাসুলভ আচরণ কখনই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকের জায়গা তিনি কলঙ্কিত করেছেন। তিনি অশালীন ভাষা ব্যবহার করে শিক্ষার্থী জিনিয়াকে ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে হেয় করেছেন। এছাড়া লঘু পাপে গুরুদণ্ড দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ দেখিয়েছে।
তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে শিক্ষার্থীকে হয়রানি করার মূলে যাদের মদদ ছিল অতিদ্রুত তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জোরালো দাবি জানান।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে আরও বক্তব্য দেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার প্রমুখ।
সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ডেইলি সান পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ফাতেমা তুজ জিনিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘একজন উপাচার্যের কাজ কি?’ লিখে পোস্ট করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে বহিষ্কার করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট ও উপাচার্যের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইট হ্যাকের মাধ্যমে ২০১৯-২০ ভর্তি পরীক্ষা বানচালের অভিযোগ এনে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
ফাতেমা তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। উপাচার্য ও জিনিয়ার একটি ফোন রের্কডিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনায় পড়েন বশেমুরপ্রবি উপাচার্য।
বিজ্ঞাপন