হোম অব ক্রিকেট শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ভেতরে তাকালে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। মনে হবে মাঠের ওপর বুঝি প্রকাণ্ড কোনো দুর্যোগ ঘটে গেছে! নারী-পুরুষ শ্রমিকরা কোদাল দিয়ে বালু মাটি কেটে ভরে ফেলছেন সীমানার কাছটা। শ্রমিকের কোদাল থেকে রেহাই পাচ্ছে শুধু উইকেট। বেষ্টনী দিয়ে আবৃত মধ্য মাঠের উইকেটগুলো। এখানে ঢুকতে মানা তাদের। বাকি সব জায়গা থেকে তোলা হচ্ছে ৬ ইঞ্চি পরিমাণ পৃষ্ঠতল। তাতে চেনা মাঠ হয়ে উঠেছে একবারে অচেনা।
আসলে এখানে চলছে সংস্কার কাজ। জানুয়ারিতে শুরু হওয়া কাজের ৪৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। মাটি তোলার কাজ পুরোপুরি শেষ হবে আগামী সপ্তাহে। তারপর শুরু হবে মাঠ ভরাটের কাজ। বসবে নতুন মাটি, লাগানো হবে বিশেষ প্রজাতির বারমুডা ঘাস। বিসিবির গ্রাউন্ড অ্যান্ড ফ্যাসিলিটিজ কমিটির ম্যানেজার সৈয়দ আব্দুল বাতেন আশা করছেন, জুলাইয়ে মাঠ হয়ে উঠবে খেলার উপযোগী।
গত ডিসেম্বরে মিরপুরে অনুষ্ঠিত হয় বিপিএল। ঘরের মাঠে জুলাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের পরবর্তী সিরিজ। সারা বছর ব্যস্ত থাকা শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম পেয়েছে বিশ্রাম। এ সময়টা কাজে লাগাচ্ছে বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটি। প্রায় ১০ বছর পর মাঠের সংস্কার কাজ করছে তারা।
মাঠ সংস্কারের বড় অংশের কাজটা হচ্ছে ড্রেনেজ ব্যবস্থায়। সৈয়দ আব্দুল বাতেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বললেন, ‘মিরপুরের মাঠ তৈরি হয়েছে প্রায় ১০ বছর হলো। আমরা ড্রেনেজ সিস্টেমটা একটু ঝালিয়ে দেখছি। মাটির নিচে থাকা জিও ট্যাক্স পাইপ, নেটিং সিস্টেম, বালু-পাথর কার্যকরী আছে কিনা তা দেখছি। যেসব জায়গায় ত্রুটি আছে তা ঠিক করছি। এসব কাজ প্রায় শেষ। সপ্তাহখানেক পর আমরা বালু দিয়ে মাঠ ভরাট করবো। আশা করি জুলাই-আগস্টে এই মাঠ ম্যাচ খেলানোর অবস্থায় চলে আসবে।’
সংস্কার কাজ শেষ হলে ড্রেনেজ ব্যবস্থা হবে আরও উন্নত, ‘গত এশিয়া কাপের ফাইনালে আপনারা দেখেছেন কী ঝড়-বৃষ্টি! মাঠে পানি জমে গেল। বৃষ্টি থামার এক ঘণ্টার মধ্যেই কিন্তু আবার খেলা মাঠে গড়ায়। এমনিতে মাঠের কোনো সমস্যা নেই। তবে, আমরা চাই আরেকটু ভালো। নতুনভাবে ঘাস বসানো হলে মাঠ আরও সবুজ হবে। আউটফিল্ড দ্রুতগতির হবে। তবে বেশি ম্যাচ খেলা হলে মাঠ আর মাঠের অবস্থায় থাকে না। সেটিও দেখতে হবে।’
২০০৪ সালে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম বিসিবির দখলে যাওয়ার পর মাঠটি নতুন করে ক্রিকেটের জন্য তৈরি করা হয়েছিলো। তার ৬ বছর পর মাঠ সংস্কারের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও হোম গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ দলের ব্যস্ত সূচির কারণে সেটা পারেনি বিসিবি। জুনের শেষ অবধি বাংলাদেশের সব খেলাই দেশের বাইরে। মোক্ষম সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে গ্রাউন্ডস কমিটি। দিন-রাত চলছে সংস্কার কাজ। রাতে কাজ হচ্ছে ফ্লাডলাইটের আলোয়।
বিজ্ঞাপন