সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চতুর্থবার শিরোপা জিতল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে নবম আসরের ফাইনালে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা সিলেটের ১৭৬ রান তাড়া করে ৪ বল হাতে রেখে।
শেষ ৪ ওভারে ৫২ রান দরকার ছিল কুমিল্লার। রুবেল হোসেনের করা ১৭তম ওভারে তিন ছক্কা ও এক চারে ২৩ রান তুলে সমীকরণ সহজ করে দেন জনসন চার্লস। ৫২ বলে ৭৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন এই ক্যারিবিয়ান। ১৭ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন মঈন আলী। রুবেল দুটি ও জর্জ লিন্ডে নেন একটি উইকেট।
ফাইনালে সিলেটের হারে টানা পঞ্চম শিরোপা জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হলো অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার। অন্যদিকে ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বেই কুমিল্লা পেল তৃতীয় শিরোপা। মাশরাফীর অধিনায়কত্বে ২০১৫ সালে প্রথম শিরোপা জিতেছিল দলটি। সবশেষ সাত আসরে অংশ নেয়া কুমিল্লার এটি চতুর্থ শিরোপা। ২০২২ সালেও তারাই জেতে ট্রফি।
বিপিএলে অদম্য কুমিল্লা প্রতিবারই বড় বড় বিদেশি তারকাদের নিয়ে দল গড়ে। বিশ্বজুড়ে আরও কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট চলায় এবার ভালোমানের বিদেশি খেলোয়াড় পাওয়া যাচ্ছিল না। তার মাঝেই কুমিল্লা প্লে-অফ রাউন্ডে নিয়ে আসে সুনিল নারিন, মঈন আলী, আন্দ্রে রাসেলের মতো খেলোয়াড়দের। যার সুফল পেয়েছে দলটি।
মাশরাফীদের দেয়া পৌঁনে দুইশ রান তাড়া করে জিততে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। লিটন দাস ফিফটি করে এগিয়ে দেন দলকে। ভিক্টোরিয়ান্স ওপেনার ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন ৩৯ বলে। মারেন ৭টি চার ও ১টি ছক্কা।
দলের রান একশ পেরিয়ে যাওয়ার পর আউট হন লিটন। চার্লসের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে জুটি হয় ৭০ রানের। তার আগে কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল ২ রান করে ফেরেন। লিটনের ওপেনিং পার্টনার নারিন একটি করে চার-ছয়ে ৫ বলে ১০ রান করে আউট হন। দলীয় ২৭ ও ৩৪ রানে প্রথম দুটি উইকেট হারায় কুমিল্লা।
বিপিএলে কার কয়টি ট্রফি
২০২৩: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
২০২২: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
২০১৯: রাজশাহী রয়্যালস
২০১৮: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
২০১৭: রংপুর রাইডার্স
২০১৬: ঢাকা ডায়নামাইটস
২০১৫: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
২০১৩: ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স
২০১২: ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিরোপা লড়াইয়ে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রান তোলে সিলেট। নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের ফিফটিতে মাঝারি পুঁজি পায় দলটি। স্লগ ওভারে কেউ ঝড়ো ইনিংস খেলতে পারলে সংগ্রহ আর বড় হতে পারত। ১১.৪ ওভারে দলটি ১০০ রান তোলে দুই উইকেট হারিয়ে।
সিলেট ওপেনার শান্ত ৪৫ বলে ৬৪ রান করেন ৯টি চার ও ১টি ছয়ে। মুশফিক ৪৮ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। মারেন ৩টি ছয়, ৫টি চার। রায়ান বুর্ল ১১ বলে করেন ১৩ রান।
বিপিএলের নবম আসরের ফাইনালে নামার আগে পাঁচশ থেকে ৪৮ রান দূরে ছিলেন শান্ত। কুমিল্লার বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে ফিফটির পথে মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন স্ট্রাইকার্স ওপেনার। বিপিএলের এক আসরে ৫০০ রান করা একমাত্র বাংলাদেশি তিনিই।
এবার নাজমুল ম্যাচ খেলেছেন ১৫টি। যার মধ্যে চারটি ফিফটি। সর্বোচ্চ ইনিংস অপরাজিত ৮৯ রানের। এবারের বিপিএলে নাজমুল ছাড়া পাঁচশ রান করতে পারেননি আর কেউ। চারশ পেরিয়েছেন দুজন। রংপুর রাইডার্সের রনি তালুকদার ( ১৩ ম্যাচে ৪২৫ রান) ও সিলেটের তৌহিদ হৃদয় (১৩ ম্যাচে ৪০৩ রান)।
মিরপুরে ফাইনালে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন হৃদয়। শান্তর ব্যাটে ভর করে ছুটতে থাকে সিলেট। অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা আজও তিন নম্বরে নামেন। সুবিধা করতে পারেননি। ১ রান করে আউট হন আন্দ্রে রাসেলের স্লোয়ারে কাভারে সহজ ক্যাচ তুলে।
শান্তর সঙ্গে ইনিংস মেরামতের হাল ধরেন মুশফিক। ৮৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটিই পথ দেখায় সিলেটকে।
মোস্তাফিজুর রহমান দুটি উইকেট নেন। রাসেল, তানভির ইসলাম, মঈন আলী ও সুনীল নারিন নেন একটি করে উইকেট।
বিজ্ঞাপন