টিভিপর্দার অন্যতম সম্ভাবনাময়ী অভিনেতা হলেও তুলনামূলক কম কাজ করছেন অ্যালেন শুভ্র। কয়েক বছর আগেও তিনি ব্যস্ত ছিলেন। ব্যতিক্রম সব চরিত্রে স্ক্রিনে আসতেন। এখন অ্যালেনকে স্ক্রিনে পাওয়া মুশকিল! দর্শকদের কথা, অ্যালেনকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়নি। আবার কেউ কেউ বলেন, অ্যালেনই হতে পারবেন আগামীর মোশাররক, চঞ্চল, নিশোদের যোগ্য উত্তরসূরি! এই অভিনেতা নিজেও দর্শকদের এমন কথার সঙ্গে অনেকটা একমত।
নাটক কম করলেও থিয়েটারে সময় দিচ্ছেন অ্যালেন। ২০১০ সাল থেকে প্রাচ্যনাটের ১৪ ব্যাচের সদস্য তিনি। সংগঠনটি ২৬ বছরে পদার্পণ করছে। সোমবার চ্যানেল আই স্টুটিওতে মহড়ায় অংশ নিয়ে এই অভিনেতা বলেন, প্রাচ্যনাট আসলে নাটক চর্চার জায়গা। এখানে কেউ আড্ডা দিতে আসে না, শিখতে আসে। আমি যখন এসেছিলাম অনেক তরুণ ছিলাম। যারা ভবিষ্যতে বড় আর্টিস্ট হতে চান তাদের এখান থেকে অভিনয় শেখা উচিত।
কাজে অনিয়মিত প্রসঙ্গ টানতেই অ্যালেন শুভ্র চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমি একেবারে অনিয়মিত তা নই। কাজ করে যাচ্ছি। আগে ২০দিন করলে এখন ১০দিন করছি। আশা করছি আগামীতে কাজ আরও বাড়বে। একটি জিনিস খেয়াল করেছি, আমার কাজ বেশি না থাকলেও যারা আমার ফ্যান তারা আমার কাজ মিস করেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের বলতে চাই, আপনারা নিরাশ হবেন না, আগামীতে আমার ভালো কাজ আসবে।
নাটক এখন ইউটিউব নির্ভর। যেখানে ভিউ প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। যেসব আর্টিস্টের ভিউ বেশি তারা সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন। বিষয়টি নিয়ে ‘আমি বিরক্ত’ উল্লেখ করে অ্যালেন শুভ্র বলেন, ভিউ প্রাধান্যদের কারণে অনেক ভালো অভিনেতার কাজ কমে গেছে, তারা বাসায় বসে আছে।
“আমি নিজেও বেশি বেশি কাজ করতে চাই। কিন্তু আমি জানিনা এখনকার প্রযোজকরা কাদের নিয়ে কাজ করে। তবে যারা কাজ করছে তাদের জন্য শুভকামনা। সত্যি বলতে আগের মতো আমি স্ক্রিপ্ট পাই না। যেমন বাবার জুতা, বিকেল বেলার পাখি স্ক্রিপ্ট কী ছিল! এসব কাজগুলো আমার পছন্দের স্ক্রিপ্টের। কিন্তু এখন অনেকে ভিউ এর পিছনে দৌড়াচ্ছে। শ্বশুর কেন রংবাজ, ছাদ ভেঙে শাশুড়ির মাথায় পড়লো, জামাই বউসহ এসব স্ক্রিপ্ট পাই।”
অ্যালেন শুভ্র বলেন, এসব ফালতু স্ক্রিপ্টে আমি কাজ করতে চাইনা। আমার একটা বাতিক আছে, যে চরিত্র একবার করে ফেলেছি সেটা আর করতে চাই না। কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ পরিচালকদের সমস্যা হচ্ছে, যে ক্যারেক্টার একবার মানুষ পছন্দ করে পরিচালকরা সেই ক্যারেক্টার নিয়ে লাফালাফি শুরু করে। ‘সুড়ঙ্গ’ মুভিতে চোর ক্যারেক্টার মানুষ পছন্দ করলো। ওই চোর ক্যারেক্টার দিয়ে নাটক বানাচ্ছে আরো দশটা। আসলে এরা অশিক্ষিত।
পরিচালকদের উদ্দেশ্যে অ্যালেন বলেন, আপনারা পড়াশোনা করেন। পড়াশোনা করলে দেখবেন ভালো গল্প ও ক্যারেক্টার বেরিয়ে আসবে। কিন্তু এসব না করে তারা কয় টাকা আয় করলো আর কয় টাকা সরানো যাবে, সেই চিন্তা নিয়ে আছে। অনেকেই বলে শিডিউল নিয়ে পিছনে ঘুরতে হয়। কিন্তু আমি ডিরেক্টর ভাইদের বলতে চাই, আপনারা ভালো স্ক্রিপ্ট ও চরিত্র নিয়ে আসেন। আর্টিস্টদের জন্য অপেক্ষা করা লাগবে না। তারাই কাজের জন্য ফোন দেবে।