সংগ্রহটা খুব একটা বড় ছিল না আফগানিস্তানের। তবে লড়াই করার মত ছিল। সেই পুঁজি নিয়ে ইংল্যান্ডকে নাস্তানাবুদ করছে আফগানরা। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ৬৯ রানে হারিয়ে আসরের প্রথম জয়ের দেখা পেল তারা।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে আফগানিস্তানকে আগে ব্যাটে পাঠায় ইংল্যান্ড। নির্ধারিত ওভারের এক বল বাকি থাকতে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৮৪ রানের সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান। জবাবে নেমে ৪০.৩ ওভারে ২১৫ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড।
ব্যাটে নামার পর দ্বিতীয় ওভারেই ইংলিশদের উইকেট তুলে নেয় আফগানিস্তান। জনি বেয়ারস্টোকে ফেরান ফজলহক ফারুকী। ৪ বলে ২ রান করে ফেরেন ইংল্যান্ড ওপেনার। সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ৩৩ রানে জো রুটকে ফেরান মুজিব উর রহমান। ১৭ বলে ১১ রান করেন রুট।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৩৫ রান। ১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে ডেভিড মালানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ নবী। ৩৯ বলে ৩২ রান করেন মালান। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৯১ রানে বাটলারকে ফেরান নাভিন উল হক। ১৮ বলে ৯ রান করেন ইংলিশ অধিনায়ক।
২১তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১১৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ১৪ বলে ১০ রান করা লিয়াম লিভিংস্টোনকে ফেরান রশিদ খান।
২৮তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১৩৮ রানে স্যাম কারেনের উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ নবী। ২৩ বলে ১০ রান করেন কারেন। ৩৩তম ওভারের শেষ বলে ক্রিস ওকসকে ফেরান মুজিব। ২৬ বলে ৯ রান করেন ওকস।
ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন হ্যারি ব্রুক। চাপের মুখে ফিফটিও তুলে নিয়েছেন এই ব্যাটার। ৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১৬৯ রানে ব্রুককে ফেরান মুজিব। ৬১ বলে ৬৬ রান করেন ইংলিশ টপঅর্ডার।
৩৯তম ওভারে দলীয় ১৯৮ রানে নবম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। আদিল রশিদকে ফেরান রশিদ খান। ১৩ বলে ২০ রান করেন এই অলরাউন্ডার।
৪১তম ওভারের তৃতীয় বলে ইংলিশদের শেষ ব্যাটারকে ফেরান রশিদ। সরাসরি বোল্ড হন ২২ বলে ১৮ রান করা মার্ক উড। ৭ বলে ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন রিচি টপলে।
আফগানিস্তানের হয়ে মুজিব উর রহমান ও রশিদ খান তিনটি করে উইকেট নেন। মোহাম্মদ নবী নেন দুটি উইকেট। এছাড়া ফজলহক ফারুকী ও নাভিন উল হক নেন একটি করে উইকেট।
আর আগে ব্যাটে নেমে শুরু থেকেই চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এক প্রকার ভয় ধরিয়ে দেয় আফগানরা, ওপেনিং জুটিতে ১৬.৪ ওভারে ১১৪ রান তুলে নেয়।
৪৮ বলে ২৮ রান করে আদিল রশিদের বলে আউট হন ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। ১৯তম ওভারে ১২২ রানে আরও দুই ব্যাটারকে হারায় আফগানিস্তান। ওভারের চতুর্থ বলে আদিল রশিদের দ্বিতীয় শিকার হন ৮ বলে ৩ রান করা রহমত শাহ। পরের বলে রানআউট হয়ে ফেরেন ঝড় তোলা গুরবাজ। ৮ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৭ বলে ৮০ করেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
এরপর আফগানদের রান তোলার গতি কমে যায়। ২৬তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ১৫২ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় তারা। ক্রিস ওকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে লিয়াম লিভিংস্টোনের শিকার হন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ২৪ বলে ১৯ রান করেন তিনি।
হাসমতউল্লাহ শহিদীও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ৩২.১ ওভারে দলীয় ১৭৪ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন রুটের শিকার হয়ে। ৩৬ বলে ১৪ রান করেন আফগান অধিনায়ক। ৩৬.১ ওভারে মার্ক উডের বলে রুটের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ১৫ বলে ৯ রান করা মোহাম্মদ নবী।
১৯০ রানে ৬ ব্যাটারকে হারানোর পর রশিদ খানকে নিয়ে হাল ধরেন ইকরাম। সপ্তম উইকেট জুটিতে ৪৩ রান তোলেন দুজনে। ৪৫তম ওভারের প্রথম বলে লংঅনের দিকে উড়িয়ে মারেন রশিদ। বাউন্ডারির কাছে জো রুটের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরে যান ২২ বলে ২৩ রান করে।
৪৭তম ওভারের পঞ্চম বলে বিশ্বকাপে নিজের অভিষেকেই ফিফটি তুলে নেন ইকরাম আলী খিল। তিনটি চার ও এক ছক্কায় ৬১ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন। ৪৮তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ২৭৭ রানে রিচি টপলের বল উড়িয়ে মারেন ইকরাম। বাউন্ডারি লাইনের কাছে ধরা পড়েন স্যাম কারেনের হাতে। ৬৬ বলে ৫৮ রান করে যান।
পরের ওভারের প্রথম বলে মার্ক উডের শিকার হন ঝড় তোলা মুজিব। টপ এজ হয়ে ধরা পড়েন জো রুটের হাতে। তিনটি চার ও এক ছক্কায় ১৬ বলে ২৮ রান করে ফেরেন।
ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে সবকটি উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ৪৯.৫ ওভারে দৌড়ে রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে ফেরেন নাভিন উল হক। ৬ বলে ৫ রান করেন তিনি। ফজলহক ফারুকী অপরাজিত থাকেন ৪ বলে ২ রানে।
ইংল্যান্ডের হয়ে আদিল রশিদ নিয়েছেন তিনটি উইকেট। মার্ক উড নেন দুটি। লিয়াম লিভিংস্টোন, রিচি টপলে ও জো রুট নেন একটি করে উইকেট।