নাটোরের সিংড়া পৌরসভার গ্যারেজে রাখা মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসের পাজেরো জিপ ও ১০টি পরিবেশবান্ধব ই-রিকশা (চলো) গাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। এছাড়াও একটি চলো অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস গাড়ির আংশিক পুড়ে গেছে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার ৫ ডিসেম্বর রাতে নাটোরের সিংড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং-২৩১) করেছেন ভুক্তভোগী মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস।
মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে বলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস দাবি করেছেন।
সিংড়া ফায়ার সার্ভিস জানায়, সোমবার ৪ ডিসেম্বর রাতে মেয়রের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত গাড়ি ও ১০টি ‘চলো’ নামের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা গ্যারেজে রাখা ছিল। পৌরসভার মালিকানাধীন এই ‘চলো’ যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। প্রতিদিন সেখানে এসব ইজি বাইক চার্জ দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ গ্যারেজে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। এসময় গ্যারেজের নৈশপ্রহরী মাহতাব উদ্দিন (৫৫) আগুনে পুড়ে আহত হন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আশপাশের বাড়ির লোকজন ঘটনাটি জানার পর দ্রুত ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও বিদ্যুৎ বিভাগে ফোন করে বিষয়টি জানান।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভাতে শুরু করেন। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে গ্যারেজের ভেতরে রাখা ১১টি যানবাহন সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। তবে গ্যারেজের বাইরে রাখা দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অন্যটি অক্ষত থাকে।
মঙ্গলবার রাতে সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌস চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, গতকাল রাতে চালকেরা গাড়িগুলো গ্যারেজে রেখে বাড়িতে গেছেন। ভোরে হঠাৎ আগুন লেগে ১১টি গাড়ি পুড়ে গেছে। এছাড়াও একটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ও নগদ ৬০ হাজার টাকা পুড়ে গেছে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, ভোর রাতে আগুনের খবর শুনার পরই ৯৯৯-এ কল করে ফায়ার সার্ভিসের সাহায্য চাই। তবে ফায়ার সার্ভিস এসে শুধু আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, গাড়িগুলো ততক্ষণে পুড়ে গেছে।
ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিংড়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহমুদা খাতুনসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
সিংড়া ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, প্রাথমিকভাবে তাদের মনে হয়েছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে গ্যারেজে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। কারণ সেখানে চলো গাড়িগুলোর ব্যাটারি চার্জে দেওয়া হয়ে থাকে।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: প্রাথমিক তদন্তে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও ঘটনাটি নাশকতা কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর সিংড়া শহরকে দূষণমুক্ত ও পৌরবাসীর জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দুটি অ্যাম্বুলেন্স সেবার পাশাপাশি ১০টি পরিবেশবান্ধব ই-রিকশা ‘চলো’ পরিবহন প্রদান করেছে জার্মানির জিআইজেড প্রকল্প। সেগুলোই আগুনে পুড়ে গেছে।