৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী বাহিনীর অবস্থান ঘিরে ফেলে মুহুর্মুহু আক্রমণ চালায়। পরাজিত হয় পাকিস্তানী বাহিনী। শত্রুমুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এদিন সকাল ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযুদ্ধের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জহুর আহমেদ চৌধুরী।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর এস ফোর্সের অধিনায়ক তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর কে এম সফিউল্লাহ বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকিস্তানি বাহিনীর যুদ্ধ হয়। ঐ যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৫ জন নিহত ও ১৪ জন বন্দী হয়। আখাউড়া উপজেলাকে হানাদারমুক্ত করার পর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অংশ দক্ষিণ দিক থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। একই সঙ্গে মিত্রবাহিনীর ৫৭তম মাউন্টের ডিভিশন আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানিসার সড়ক দিয়ে শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। শহরের চারপাশে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর শক্ত অবস্থানে থাকায় হানাদার বাহিনী পিছু হটতে থাকে।
মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মূলত দুটি সেক্টরের অধীনে ছিলো। দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বে কসবা, গঙ্গাসাগর ও আখাউড়া থেকে পশ্চিমে ভৈরব বাজার রেললাইন পর্যন্ত ছিল ২নং সেক্টরে এবং পূর্বে সিঙ্গার বিল থেকে উত্তরে হবিগঞ্জ পর্যন্ত ছিল ৩নং সেক্টরের অন্তর্ভূক্ত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন। ফলে মুক্তিযুদ্ধ এখানে মূলত জনযুদ্ধে পরিণত হয়েছিল। সর্বস্তরের সহযোগিতায় হানাদার বাহিনী থেকে মুক্তি লাভ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া।