Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

৬২ বছর পর কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব ক্যাস্ত্রো পরিবারের বাইরে

অবশেষে বিদায় নিচ্ছে কাস্ত্রো পরিবার। ৬২ বছরের মধ্যে এই প্রথম কাস্ত্রো পরিবারের কেউই আর নেতৃত্বের বড় কোনো পদে থাকবেন না। তবে দেশটির শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে কাস্ত্রো পরিবার সরে দাঁড়ালেও নেতৃত্ব থাকছে সেই কমিউনিস্ট পার্টির হাতেই।

কমিউনিস্ট পার্টির চার দিনের দলীয় সম্মেলন শুরু হয় শুক্রবার। এ সম্মেলনেই ৮৯ বছর বয়সী রাউল কাস্ত্রো দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর পদ তথা দলের ফার্স্ট সেক্রেটারির পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। তার স্থলাভিষিক্ত হবেন কিউবার প্রেসিডেন্ট ৬০ বছর বয়সী মিগেল দিয়াস কানেল। এর মধ্য দিয়ে কিউবার রাজনীতিতে ছয় দশক ধরে চলা কাস্ত্রো পরিবারের আধিপত্য শেষ হচ্ছে। ছয় দশকের মধ্যে ফিদেল কাস্ত্রো কিউবা শাসন করেন ১৯৫৯ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত।

দিয়াস কানেল হবেন কমিউনিস্ট পার্টির তৃতীয় প্রথম সেক্রেটারি। এর পাশাপাশি তিনি প্রেসিডেন্ট পদেও বহাল থাকবেন। তা ছাড়া ১৯৫০’র দশকে কাস্ত্রো সমর্থিত অভ্যুত্থানের পর কিউবার প্রথম বেসামরিক নেতাও হবেন দিয়াস কানেল। এই অভ্যুত্থানের সময় জন্মও হয়নি দিয়াস কানেলের।

কিউবার এক সাবেক কূটনীতিক কার্লস আলসুগারায় প্রেসিডেন্ট দিয়াস সম্পর্কে বলেন, ‘দিয়াস হবেন রাজনৈতিক ও আদর্শগত সংগ্রামের সময়ের অংশ।’ দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্ট ইউনিটের এক বিশেষজ্ঞ নরম্যান মিকি বলে, ‘এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে কাস্ত্রোর অনুপস্থিতিতে কমিউনিস্ট পার্টিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে।

’ ২০১৯ সালের মে মাসে নতুন একটি সংবিধান পাস করা হয়। ওই সংবিধানে এটা স্পষ্ট করা হয়েছে যে সমাজতন্ত্রের প্রতি দেশের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তনীয়।

নেতৃত্বে বদলের চেয়ে কিউবার সাধারণ মানুষের অনেক বেশি চিন্তা আর্থিক সঙ্কট নিয়ে। তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে ওই দ্বীপরাষ্ট্র। মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যসামগ্রীর অভাব, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য লম্বা লাইন আর স্বাধীনতার অভাবে জেরবার কিউবানেরা।

আর্থিক সংস্কারে কিউবা সরকারের কিছু ভুল পদক্ষেপ, ট্রাম্প ক্ষমতার সময়ে আমেরিকান নিষেধাজ্ঞা বাড়া ও করোনা অতিমারির ফলে পর্যটকের সংখ্যা কমাই কিউবার বর্তমান আর্থিক সঙ্কটের কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। ২০২০ সালে ১১ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধি কমেছে। ১৯৯৩ সালের পরে এই প্রথম এত বড় ধাক্কা খেয়েছে কিউবার অর্থনীতি।

অনেকের মতে, মিগুয়েলের নেতৃত্ব পরিবর্তনের ইঙ্গিত না হলেও ধীরে ধীরে তরুণ প্রজন্মের চাপে কিছুটা বদল আনতে বাধ্য হচ্ছে কিউবান সরকার। ফেব্রুয়ারি মাসে রাষ্ট্রের হাতে থাকা অর্থনীতির দরজা বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য অনেকটাই খুলে দিয়েছে কিউবা। সম্প্রতি বাক্‌স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনাও করেছে তারা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মোবাইল ইন্টারনেটের দৌলতে এখন কিউবাতেও মাঝে মাঝেই বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন আন্দোলনকারীরা।

Exit mobile version